গণিতের নিয়ে আলোচনা পর্ব-০১
টেকনিক -১
মিশ্রণে যখন দুইটি অনুপাতের সংখ্যা দু্ইটির পার্থক্য যদি একই হয় তখন নতুন মিশ্রিত দ্রব্যের পরিমাণ={(মোট মিশ্রণের পরিমাণ/অনুপাতের ছোট সংখ্যা)}X অনুপাতের পার্থক্য।
উদা: ৩০লিটার পরিমাণ মিশ্রণে এসিড ও পানির অনুপাত ৭:৩। এ মিশ্রণে কি পরিমাণ পানি মিশ্রিত করলে এসিড ও পানির অনুপাত হবে ৩:৭।
লক্ষ্য করুন: এখানে অনুপাতের অন্তর উভয় ক্ষেত্রেই (৭-৩=৪) একই ।
অতএব, সূত্র মতে
নতুন মিশ্রিত দ্রব্যের পরিমাণ={(মোট মিশ্রণের পরিমাণ/অনুপাতের ছোট সংখ্যা)}X অনুপাতের পার্থক্য।
বা, নতুন মিশ্রিত দ্রব্যের পরিমাণ=(৩০/৩)X ৪
=৪০লিটার । (উত্তর)
টেকনিক -২
মিশ্রণে যখন দুইটি অনুপাতের সংখ্যা দু্ইটির পার্থক্য যদি ভিন্ন হয় তখন নতুন মিশ্রিত দ্রব্যের পরিমাণ=(মোট মিশ্রণের পরিমাণ/১মঅনুপাতের সংখ্যা দুটির যোগফল। )
উদা:
২৫ গ্রাম একটি সোনার গহনায় সোনা ও তামার অনুপাত ৪:১। গহনাটিতে আর কতটুকু সোনা যোগ করলে এতে সোনা ও তামার অনুপাত ৫:১ হবে?
লক্ষ্য করুন: এখানে অনুপাতের অন্তর উভয় ক্ষেত্রেই ভিন্ন। যেমন: ৪-১=৩ আবার ৫-১=৪।
অতএব , সূত্রমতে
নতুন মিশ্রিত দ্রব্যের পরিমাণ=(মোট মিশ্রণের পরিমাণ/১মঅনুপাতের সংখ্যা দুটির যোগফল। )
বা, নতুন মিশ্রিত দ্রব্যের পরিমাণ= ২৫/(৪+১)=৫ (উত্তর)
নিজে নিজে করুন
প্রশ্ন:১।৩২ লিটার অকটেন- পেট্রোল মিশ্রেনে , পেট্রোল ও অকটেনের অনুপাত ৫:৩। এতে আর কত অকটনে মিশালে পেট্রোল ও অকটেনের অনুপাত হবে ৪:৫? ।
২।২১লিটার পরিমাণ কেরোসিন ও পেট্রোল মিশ্রেনে অনুপাত ৪ :৩। এ মিশ্রণে কি পরিমাণ পেট্রোল মিশ্রিত করলে কেরোসিন ও পেট্রোল অনুপাত হবে ৩:৪ হবে?
৩। ৪২গ্রাম ওজনের একটি গয়নায় সোনা ও তামার অনুপাত ৪:৩ । এতে কত সোনা মিশালে সোনা ও তামার অনুপাত ৫:৩ হবে?
৪। ৩০লিটার পরিমাণ এসিড ও পানির অনুপাত ৭:৩ । ঐ মিশ্রণে কি পরিমাণ পানি মিশ্রিত করলে এসিড ও পানির অনুপাত ৩:৭ হবে?
৫। একটি সোনার গহনার ওজন ১৬ গ্রাম ।সোনা ও তামার অনুপাত ৩:১ । এতে কত সোনা মিশালে সোনা ও তামার অনুপাত ৪:১ হবে?
৬।৬০লিটার পরিমাণ কেরোসিন ও পেট্রোল মিশ্রেনে অনুপাত ৭ :৩। এ মিশ্রণে কি পরিমাণ পেট্রোল মিশ্রিত করলে কেরোসিন ও পেট্রোল অনুপাত হবে ৩:৭ হবে?।
উত্তর: ১/ ৪, ২/৭, ৩/৬, ৪/৪০, ৫/৪, ৬/৮০
বর্গমূল বের করা
মাত্র ১০ সেকেন্ডে ক্যালকুলেটর ছাড়া কীভাবে যে কোনো সংখ্যার বর্গমূল বের করা সম্ভব? বুদ্ধি খাটালে আসলে যে কোনো কিছুই সম্ভব।
চলুন তাহলে শিখে ফেলি, বর্গমূল বের করার চমৎকার একটি ট্রিক। প্রথমে একটি ৩ অঙ্কের সংখ্যার কথা চিন্তা করি। ধরি, ৫৭৬ সংখ্যাটির বর্গমূল বের করতে হবে। ক্যালকুলেটর ছাড়া দ্রুত বের করা সম্ভব নাকি? মনে হয় না। এবার একটু বুদ্ধি খাটিয়ে “সম্ভব না” কে “সম্ভব” বানিয়ে ফেলতে হবে।
বর্গমূল বের করার এই ট্রিক খাটানোর জন্য শুরুতেই আমাদের ছোট সংখ্যাগুলোর বর্গের একটা লিস্ট বানিয়ে ফেলতে হবে। লিস্টটি এরকমঃ
১২ = ০১
২২ = ০৪
৩২ = ০৯
৪২ = ১৬
৫২ = ২৫
৬২ = ৩৬
৭২ = ৪৯
৮২ = ৬৪
৯২ = ৮১
খেয়াল করলে দেখা যাবে, প্রতিটা সংখ্যার বর্গের শেষ অঙ্কটি গাঢ় রঙে লেখা আছে। কারণ শেষ অঙ্কটিই আমাদের ট্রিকের বেলায় কাজে লাগবে।
এবার, ৫৭৬ এর বর্গমূল বের করতে করতেই আমরা শিখে ফেলবো ক্যালকুলেটর ছাড়াই কিভাবে দ্রুত বর্গমূল বের করা যায়।
১) প্রথমে আমাদের প্রশ্নতে দেয়া সংখ্যার শেষ অঙ্কটি নিয়ে কাজ করতে হবে। ৫৭৬ এর শেষ অঙ্কটা ৬; এবার ৬ অঙ্কটি আমাদের প্রথম লিস্টের কোন কোন সংখ্যার বর্গে আছে, তা খুঁজে বের করি।
১২ = ০১
২২ = ০৪
৩২ = ০৯
৪২ = ১৬
৫২ = ২৫
৬২ = ৩৬
৭২ = ৪৯
৮২ = ৬৪
৯২ = ৮১
লিস্টে ৬ আছে দুইটি বর্গেঃ ১৬ আর ৩৬ এ। এদের বর্গমূল যথাক্রমে ৪ এবং ৬ তাই আমাদের ফলাফল এর শেষ অঙ্কটা হবে ৪ অথবা ৬ ; কোনটি হবে, সেটা আমরা পরের ধাপে বের করবো।
২) এবার আমাদের প্রশ্নের সংখ্যাটির শেষ দুটি অঙ্ক কেটে দিতে হবে। এগুলোর কাজ শেষ। এখন শুধু প্রথম অঙ্ক নিয়ে কাজ। ৫৭৬ এর শেষ দুটো অঙ্ক কেটে দিই। শুধু ৫ দিয়ে কাজ করি।
আমাদের প্রথম লিস্টের কোন বর্গটি ৫ এর চেয়ে ছোট, সেটির দিকে তাকাই।
১২ = ০১
২২ = ০৪
৩২ = ০৯
দেখা যাচ্ছে, ০৪ ই ৫ এর চেয়ে ছোট, কেননা এর পরের ধাপে ০৯ আছে, যা ৫ এর চেয়ে বড়, ওটা নেয়া যাবে না।
তাই ০৪ এর বর্গমূল ২ নিই। এটিই আমাদের ফলাফলের প্রথম অঙ্ক।
৩) তাহলে আমাদের ফলাফল হবে ২৪ অথবা ২৬ ; শেষে ৪ হবে নাকি ৬ হবে, তা কিন্তু আমরা এখনো জানি না। তাহলে জেনে নিই, শেষে কী হবে।
৪) আমাদের ফলাফলের শেষের অঙ্কটি ছোটটি হবে (৪) নাকি বড়টি হবে (৬), এটি জানার জন্য আমাদের ফলাফলের প্রথম অঙ্কের অর্থাৎ ২ এর সাথে এর ক্রমিক সংখ্যাটিকে গুণ করতে হবে। এবং গুণফলের সাথে প্রশ্নের সংখ্যাটির প্রথম অঙ্কটি তুলনা করতে হবে।
প্রশ্নের প্রথম অঙ্ক গুণফলের চেয়ে ছোট হলে, শেষের অঙ্কটাও ছোটটিই হবে আর প্রশ্নের প্রথম অঙ্ক গুণফলের চেয়ে বড় হলে বড়টিই হবে ফলাফলের শেষ অঙ্ক।
এখন, ২ এর পরের ক্রমিক সংখ্যা কত? ৩ ; তাহলে ২X৩=৬ ; এই ৬ এর চেয়ে আমাদের প্রশ্নের প্রথম অঙ্ক ৫ ছোট। তাই ফলাফলের শেষ অঙ্ক হবে ৪ এবং ৬ এর মধ্যে ছোটটিই। অর্থাৎ, ৪; তাই ফলাফল ২৪
এতদূর পড়ে হয়তো মনে হচ্ছে, কাজটা খুব কঠিন। কিন্তু কাজটা আসলেও কঠিন না। কয়েকবার প্রাকটিস করলেই সহজ লাগবে।
এবার একটা চার অঙ্কের সংখ্যা নিই। ধরি, ১৮৪৯ এর বর্গমূল বের করতে হবে।
১) শেষ অঙ্কটি নিয়ে কাজ করি। শেষ অঙ্ক ৯; লিস্টের কোন কোন সংখ্যার বর্গে ৯ আছে?
৩২ = ০৯
৭২ = ৪৯
তাই আমাদের ফলাফল এর শেষ অঙ্ক হবে ৩ অথবা ৭;
২) এখন ১৮৪৯ এর শেষ দুটো অঙ্ক কেটে দিই। শুধু প্রথম দুটি অঙ্ক থাকেঃ ১৮; এই ১৮ নিয়ে কাজ করতে হবে।
১৮ এর চেয়ে ছোট কোন বর্গসংখ্যাটি আছে লিস্টে, একটু দেখিঃ
১২ = ০১
২২ = ০৪
৩২ = ০৯
৪২ = ১৬
৫২ = ২৫
২৫ যেহেতু ১৮ এর চেয়ে বড় এবং ১৬ ছোট। তাই ১৬ এর বর্গমূল ৪ নিই। এই ৪ আমাদের ফলাফলের প্রথম অঙ্ক।
৩) তাহলে আমাদের ফলাফল ৪৩ অথবা ৪৭; কোনটা নিবো?
প্রথম অঙ্ক ৪, এর ক্রমিক সংখ্যা ৫; গুণ করে পাইঃ ৪X৫ = ২০
প্রশ্নের প্রথম দুই অঙ্ক ১৮ কিন্তু ২০ এর চেয়ে ছোট। তাই শেষ অঙ্কটিও নিবো ছোট।
অর্থাৎ, ৩ এবং ৭ এর মধ্যে ছোট ৩; তাই ফলাফল ৪৩
এভাবে যে কোনো সংখ্যার (যার বর্গমূল একটি পূর্ণসংখ্যা) বর্গমূল বের করা সম্ভব।
আশা করি, দুইটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝতে সহজ হলো। এবার ২০২৫ এবং ৩৩৬৪ সংখ্যা দুটির বর্গমূল মুখে মুখে এই পদ্ধতিতে বের করার দায়িত্ব পাঠকের হাতে।
11 থেকে 99 পর্যন্ত বর্গ করার কৌশল
সূত্র:- (xy)^2=abc [যেখানে;b,cএকটি
করে সংখ্যা & a এক বা একাধিক সংখ্যা হতে পারে]
এবং
a=x^2
b=2xy
c=y^2
এবার 11 &25 বর্গ করি৷
(11)^2=(1^2)(2.1.1)(1^2)
=(1)(2)(1)
=121
আবার
(25)^2=(2^2)(2.2.5)(5^2)
=(4)(20)(25)
=(4)(20+2)5
=(4)(22)5
=(4+2)25
=625
☞ এই পোষ্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন☞জিজ্ঞাসা☞সমস্যা☞তথ্য জানার থাকে তাহলে আপনি☞কমেন্ট করলে আপনাকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব☞☞☞ "গণিতের নিয়ে আলোচনা পর্ব-০১"
Post a Comment