বাগধারা

বাগধারা


বাগধারা ভাষায় বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয় বলে বাগধারা ভাষাকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে। বাগধারা বাংলা ভাষার শব্দ ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। বাগধারার আছে আলাদা প্রকাশভঙ্গি। বাক্যরীতি থেকে বাগভঙ্গি, সব ক্ষেত্রেই এর নিজস্ব শৈলী। যে শব্দ বা শব্দগুচ্ছ দিয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ পায় তাকে বাগধারা বলে। বাগধারায় এমন একটি শক্তি আছে যা সাধারণ অর্থে বোঝা যাবে না। যেমন: ‘গোবরগণেশ, বিড়ালতপস্বী, গোবরে পদ্মফুল, ঘোড়ার ডিম, কই মাছের প্রাণ। বাগধারা তিন প্রকারে ভাব প্রকাশ করে থাকে। যেমন:

১. বাচ্যার্থ: শব্দের মুখ্য অর্থকে বাচ্যার্থ বলে। যেমন: ঈশ্বর, নদী, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদি।

২. লক্ষ্যার্থ: যখন কোন শব্দ মুখ্য অর্থ ছাড়া অন্য অর্থ প্রকাশ করে তখন তাকে লক্ষ্যার্থ বলে। যেমন: ‘গোপালের লেখাপড়ার গা নাই’। (গাত্র>গা) ‘গা’ শব্দের মুখ্য হলো দেহ’ কিন্তু এখানে বাচ্যার্থে বা মুখ্যার্থে ব্যবহৃত না হয়ে লক্ষ্যার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এই বাক্যে ‘গা’ শব্দের লক্ষ্যার্থ হলো ‘ইচ্ছা’।

৩. ব্যাঙ্গ্যার্থ: যখন কোনো শব্দ বা শব্দসমষ্টি বাচ্যার্থ বা লক্ষ্যার্থ প্রকাশ না করে অন্য একটি নতুন গভীর ব্যঞ্জনাপূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে তখন তাকে ব্যাঙ্গ্যার্থ বলে। যেমন: ‘রমেশ বাবুর ছেলে একটা অকালকুষ্মাণ্ড।’ ‘অকাল-কুষ্মাণ্ডের’ ব্যাঙ্গ্যার্থ হলো ‘অপদার্থ’।

সুতরাং লক্ষ্যার্থ ও ব্যাঙ্গার্থযুক্ত শব্দ বা শব্দসমষ্টি অথবা বাক্যাংশকে বাগধারা বলে।

বাগধারা ও প্রবাদের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।

বাগধারা ও প্রবাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন :

১. যে শব্দ বা শব্দগুচ্ছ দিয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ পায় তাকে বাগধারা বলে। আর বিশেষ অর্থে প্রকাশিত উক্তি বা কথনকে প্রবাদ বলে।

২. বাগধারা লোকমুখ হতে সৃষ্টি হয়েছে। আর প্রবাদ চিন্তাশীল ব্যক্তি ও লেখক হতে সৃষ্টি হয়েছে।

৩. বাগধারা জনপ্রিয় বা ছন্দবদ্ধ উক্তি নয়। আর প্রবাদ জনপ্রিয় বা ছন্দবদ্ধ উক্তি।

৪. বাগধারা হলো অলংকারহীন শব্দ বা শব্দগুচ্ছ। আর প্রবাদ হলো অলংকারসমৃদ্ধ সংক্ষিপ্ত বাক্য।

৫. বাগধারায় পুরো বুদ্ধির ছাপ নাই। আর প্রবাদে পুরো বুদ্ধির ছাপ আছে।

৬. বাগধারার অর্থ অতি সহজে বুঝা যায় না তাই এটি একটু জটিল। আর প্রবাদের অর্থ অতি সহজে বুঝা যায় তাই এটি সহজ সরল, ছন্দবদ্ধ, মিলেবদ্ধ, স্পষ্ট হয়।

বাগধারা গঠন

বিভিন্নভাবে বাগধারা গঠিত হতে পারে। যেমন:

১. বিশেষ্য + বিশেষ্য=গোবর গণেশ

২. বিশেষ্য + বিশেষণ=বকধার্মিক

৩. একাধিক বিশেষ্য + বিশেষণ=কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা, এক ঢিলে দুই পাখি মারা

৪. দ্বিত্বক্রিয়া (আ/ই-প্রত্যয় যোগে)=মাখামাখি, নাচানাচি

৫. ক্রিয়া বিশেষণযোগে=গলায় গলায় ভাব

বাগধারার ব্যবহার

বাগধারা অর্থ বাক্যরচনা



অ আ ক খ (সাধারণ জ্ঞান)— এ বিষয়ে তার অ আ ক খ জানা নাই।

অক্কা পাওয়া (মারা যাওয়া)— বৃদ্ধ লোকটি বাসের ধাক্কায় অক্কা পেয়েছে।

অকালকুষ্মাণ্ড (অপদার্থ)—ওকে দিয়ে কিছু হবে না, ও অকালকুষ্মাণ্ড।

অন্ধের যষ্ঠি (একমাত্র অবলম্বন)— যে ছিল মায়ের অন্ধের যষ্ঠি সেও অকালে মারা গেলো।

অমাবস্যার চাঁদ (অদৃশ্য)—রহিম ভালো চাকরি পেয়ে একেবারে অমাবস্যার চাঁদ হয়ে গেছে।



আকাশকুসুম (অসম্ভব কল্পনা)— আকাশকুসুম না ভেবে কাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

আকাশ পাতাল (বড় ব্যবধান) — দুই ভায়ের আচরণ কী আকাশ পাতাল ব্যবধান!

আমড়াকাঠের ঢেঁকি (অপদার্থ)— আমড়াকাঠের ঢেঁকিকে দিয়ে কোন কাজে ভালো ফল আশা করা যায় না।

আষাঢ়ে গল্প (আজগুবি গল্প)— আষাঢ়ে গল্প শুনিয়ে কারো কাছ থেকে উপকার পাওয়ার আশা করো না।

আঙুল ফুলে কলাগাছ (হঠাৎ বড়লোক হওয়া)— অসৎ পথেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া যায়।

ই/ঈ

ইঁচড়ে পাকা (অকালে পাকা)— ইঁচড়ে পাকা ছেলেটি বাবা মায়ের কথা শোনে না।

ইলশেগুঁড়ি (গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি)— সকাল থেকেই শুরু হয়েছে ইলশেগুঁড়ি।

ঈদের চাঁদ (অতি আনন্দ)— হারানো ছেলেকে পেয়ে মা যেন ঈদের চাঁদ পেয়েছে।

উ/ঊ

উত্তম-মধ্যম (প্রহার) — পুলিশ চোরটিকে কিছু উত্তম-মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দিলো।

উনিশ-বিশ (সামান্য পার্থক্য)— হারজিতটি উনিশ-বিশে হয়েছে।

উঠে পড়ে লাগা (আদার জল খেয়ে লাগা/প্রাণপন চেষ্টা করা)—একবার ফেল করে ছেলেটি পাশের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।

উনপাঁজুরে (হতভাগ্য)— উনপাঁজুরে লোকটির ভাগ্যে সারা জীবনেও সুখ মিলল না।



এলাহিকাণ্ড (বিরাট ব্যাপার)— তার মেয়ে বিয়ে যেন এক এলাহিকাণ্ড।

এক ঢিলে দুই পাখি (এক প্রচেষ্টায় উভয় উদ্দেশ্য সাধন)— চালাক লোকটি এক ঢিলে দুই পাখি মারল।



কলুর বলদ (পরাধীন)— লোকটি সারা জীবন কলুর বলদের মতো খেটে গেলো।

কড়ায় গণ্ডায় (পুরোপুরি)— পাওনা টাকা তার কাছ থেকে কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নিবি।

কান খাড়া করা (সতর্ক হওয়া)—রাস্তাঘাটে কান খাড়া করে চলতে হয়।



গোঁফ খেঁজুরে (খুব অলস)— গোঁফ খেঁজুরে লোক দিয়ে দেশের উন্নতি অসম্ভব।

গোবর গণেশ (অপদার্থ/মূর্খ)— গোবর গণেশ দিয়ে কোন কাজে ভালো ফল আশা করা যায় না।

গোড়ায় গলদ (মূলে ভুল)— অংক মিলবে কী করে, এর তো গোড়ায় গলদ আছে।

গুঁড়েবালি (আশায় নৈরাশ্য)— শেষমেষ সব আশাই গুঁড়েবালি হবে।



ঘোড়ার ডিম (মিথ্যা জিনিস/অবাস্তব বস্তু)— এমন লেখাপড়া করলে পরীক্ষায় ঘোড়ার ডিম পাবা।

ঘোড়ার ঘাস কাটা (বাজে কাজ করা)— ঘোড়ার ঘাস কাটো; পরীক্ষায় ভালো করতে পারলে না।



চোখের পর্দা (লজ্জা)— বড় হয়ে কী চোখের পর্দা খেয়েছে?

চোখের মণি (অতি আদরের)— ছেলেটি গরিব মায়ের চোখের মণি।

চোখের বালি (চোখের কাঁটা/চক্ষুশূল)— খারাপ কাজ করে বাবা মায়ের কাছে চোখের বালি হইও না।

চোখ টাটান (হিংসা করা)— অন্যের ভালো দেখে অনেকের চোখ টাটায়।

চোখে সরষে ফুল দেখা/চোখে অন্ধকার দেখা (বিপদ দেখা, হতবুদ্ধি)— সারা বছর না পড়লে চোখে সরষে ফুল /চোখে অন্ধকার দেখতে হয়।

জ/ঝ

জলে কুমির ডাঙায় বাঘ (দুদিকেই বিপদ/উভয় সংকট) — জলে কুমির ডাঙায় বাঘ নিয়ে বাঁচা কষ্টকর।

জিলাপির প্যাঁচ (খারাপ বুদ্ধি)— জিলাপির প্যাঁচ দিয়েও লোকটি বাঁচতে পারল না।

ঝোপ বুঝে কোপ মারা (অবস্থা বুঝে সুযোগ গ্রহণ) — ছেলেটি ঝোপ বুঝে কোপ মেরেই সফল হয়েছে।

ট/ঠ

টনক নড়া (সজাগ হওয়া)— এবার ফেল করে ছেলেটির টনক নড়েছে।

টাকার গরম (অহংকার করা)— টাকার গরম বেশি দিন টেকে না।

টাকার কুমির (বড়লোক)— লোকটি টাকার কুমির কিন্তু হাড়কিপটে।

ঠোঁটকাটা (স্পষ্টবাদী)— সবসময় ঠোঁটকাটা হলে চলে না।



তাসের ঘর (ক্ষণস্থায়ী)— জীবনটি তাসের ঘর তাই সৎ হয়ে চলাই উচিত।

তিলকে তাল করা (ছোটকে বড় করা)— ঘটকরা সবসময় তিলকে তাল করে।

তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠা (রেগে যাওয়া)—রগচটা লোকরা সবসময় তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে।

তালপাতার সেপাই (ছোটতে বড় শক্তি)— লোকটি ছোট হলে কী হবে একেবারে তালপাতার সেপাই।

তুষের আগুন (গোপন কষ্ট) —অন্যের ক্ষতি করলে তুষের আগুনে জ্বলতে হয়।

তেলে মাথায় তেল দেয়া (যার আছে তাকে আরো দেয়া) —সবাই তেলে মাথায় তেল দেয়।

দ/ধ/ন

দুধে মাছি (সুসময়ে বন্ধু/বসন্তের কোকিল)— দুধে মাছির মতো বন্ধু হইও না।

দুমোখো সাপ (এক মুখে দুরকম কথা)— দুমুখো সাপকে কেউ পছন্দ করে না।

দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা (যত্নে শত্রু পালা)— দুধ কলা দিয়ে সাপ পুষে লোকটি নিজের ক্ষতি করল।

দশের লাঠি একের বোঝা (সকলে যেটি সহজে করা যায়, একের পক্ষে সেটি বোঝা)— দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ।

ধামা ধরা (তোষামদী করা)— টাকা থাকলে সবাই ধামা ধরে।

নাকে খৎ (প্রায়শ্চিত্ত করা)— ছেলেটিকে নাকে খৎ দিয়ে ছেড়ে দেয়া হলো।

ননীর পুতুল ((শ্রমবিমুখ/নরম স্বভাবের)— ননীর পুতুলকে দিয়ে কঠিন কাজ হবে না।

নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো (নিশ্চিন্ত থাকা)— নাকে তেল দিয়ে ঘুমালে পরীক্ষা ভালো হবে?



পটল তোলা (অক্কা পাওয়া/মরে যাওয়া)— বাসের ধাক্কায় সে পটল তুলেছে।

পাকা ধানে মই দেয়া (প্রায় সফল কাজ নষ্ট করা)— পাকা ধানে মই দেয়ার মতো বড় ক্ষতি আর নাই।

পুকুর চুরি (বড় চুরি)— পরীক্ষায় নকল করাও পুকুর চুরি।

পুঁটি মাছের প্রাণ (ক্ষণস্থায়ী)— পুঁটি মাছের প্রাণ নিয়ে বড় কাজ সমাধান করা যাবে না।

ব/ভ

বইয়ের পোকা (খুব বই পড়ায় অভ্যস্ত ব্যক্তি)— আমার মা বইয়ের পোকা।

ব্যাঙের সর্দি (অসম্ভব ব্যাপার)— কৃষকের কষ্ট আর ব্যাঙের সর্দি একই কথা।

বুকের পাটা (দুঃসাহস)— বুকের পাটা থাকে তো কাজটি করে দেখাও।

ভেজা বেড়াল (কপট ব্যক্তি)— লোকটি দেখতে শান্ত হলেও আসলে ভেজা বেড়াল।



মগের মুল্লুক (অরাজকতা)— দেশটি কী মগের মুল্লুক যে যা ইচ্ছা তাই করবে।

মাটির মানুষ (নিরীহ)— আমার মা মাটির মানুষ।

মানিকজোড় (অন্তরঙ্গ ভাব)— মানিকজোড় বলেই তাদের গলায় গলায় ভাব।



হ-য-ব-র-ল (বিশৃংখল)— ভালো ছাত্ররা টেবিলে বই হ-য-ব-র-ল করে রাখে না।

হাতেখড়ি (শুরু/আরম্ভ)— শিশুর লেখা পড়ার হাতেখড়ি মাই দিয়ে থাকেন।

হাতে কলমে (প্রত্যক্ষভাবে)— হাতে কলমে শিক্ষা দেয়াই প্রকৃত শিক্ষা দেয়া।

হাত টান (চুরির অভ্যাস)— লোকটির হাত টানের অভ্যাস আছে।অ

১. অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ (ভক্তি শ্রদ্ধার মাত্রা বেশি হলে সন্দেহ জাগে যে এর পেছনে হয়তো স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্য আছে) চেয়ারম্যানের সাগরেদদের দেখলেই বোঝা যায় তাদের মতলব খারাপ-কেনা জানে অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।

২. অনভ্যাসে বিদ্যা হ্রাস পায় (চর্চাহীন থাকলে অর্জিত জ্ঞানও হ্রাস পায়) কতদিন কবিতা পড়া নাই, আমাকে অনুরোধ কর না জানইত অনভ্যাসে বিদ্যা হ্রাস পায়।

৩. অতি দর্পে হত লংকা (অহংকারের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে পতন অবশ্যম্ভাবী) ধনের গৌরবে তোমার যেন মাটিতে পা পড়ে না, এ কথাতো জানো অতি দর্পে হত লঙ্কা।

৪. অতি বাড় বেড়ো নাকো ঝড়ে পড়ে যাবে (অহংকার বেশি করতে গেলে পতন অবশ্যম্ভাবী) মামা এসপি হয়েছে বলেই অতি বাড় বেড়ো না একদিন অপরাধী ঠিকই ঝড়ে পড়বে।



৫. আঙুল ফুলে কলা গাছ (সামান্য অবস্থা থেকে হঠাৎ বড়লোক হওয়া) রহমত সরকারি চাকরি পেয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছিল, দুর্নীতির দায়ে এখন তার জায়গায় শ্রী ঘরে।

৬. আঠার মাসে বছর (দীর্ঘসূত্রিতা/কুঁড়ে স্বভাব) কাজটি আমার তাড়াতাড়ি দরকার, তোমাকে দিয়ে হবে না, তোমার তো আঠার মাসে বছর।

৭. আদ্যিকালের বদ্যি বুড়ো (খুব প্রাচীন ব্যক্তি) অল্প বয়সেই বলছ-আদ্যিকালের বদ্যি বুড়ো।

৮. আপন ভালো তো জগৎ ভালো (নিজে ভাল হলে সব ভালো) অচেনা জায়গা বলে ভয় পাবার কিছু নাই, মনে রেখ আপন ভালো তো জগৎ ভালো।

৯. আদার ব্যাপারির জাহাজের খবর (সামান্য কাজের লোক) সামান্য কেরানি হয়ে অফিসের নীতি নির্ধারণী বিষয় নিয়ে মাথা খাটানো আর আদার ব্যাপারির জাহাজের খবর নেয়া সমান কথা।

১০. আমড়া কাঠের ঢেঁকি (অকর্মণ্য) তুমি আস্ত একটা আমড়া কাঠের ঢেঁকি, জগৎ সংসারে কিছুই তোমাকে দিয়ে হবে না।

১১. আপন চেয়ে পর ভালো (অপ্রত্যাশিত কারো সাহায্য লাভ) এই বিপদে স্বজনদের কারো সাহায্যই পাইনি, তুমিই আমাকে উদ্ধার করেছ এখন দেখছি আপন চেয়ে পর ভালো।

১২. আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া (দুর্লভবস্তু নাগালের মধ্যে পাওয়া) এই দুর্মূল্যের বাজারে টাকা ধার পাওয়া আর আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া সমান কথা।

১৩. আকাশ থেকে পড়া (অপ্রত্যাশিত) বিশ্বস্থ কর্মচারীর দুর্নীতির কথা জানতে পেরে বড় সাহেব আকাশ থেকে পড়লেন।

১৪. আপনার নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ (নিজের ক্ষতি করেও অপরের অনিষ্ট করা) বাংলাদেশের রাজনীতিতে শুধু বিরোধীতার স্বার্থে বিরোধীতা এখানে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার লোকের অভাব নাই।

১৫. আকাশ পাতাল প্রভেদ (প্রচুর ব্যবধান) চৌধুরী বংশ ও সর্দ্দার বংশের মধ্যে আকাশ পাতাল প্রভেদ, ওদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে ওঠা সহজ নয়।

১৬. আপন চরকায় তেল দাও (কেউ অনধিকার চর্চা করলে, তাকে একথা বলে সতর্ক করা হয়) বন্ধুর পারিবারিক সমস্যায় নাক না গলিয়ে নিজের চরকায় তেল দাও।



১৭. ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় (উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ইচ্ছাই যথেষ্ট) পরিবেশ যতই প্রতিকূল হোক না কেন কাজে নেমে পড়, জানতো ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়।

১৮. ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় (কারো সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে বিনিময়ে দুর্ব্যবহার পেতে হয়) অন্যকে অপমান করার আগে স্মরণ রেখ ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়।

১৯. ইল্লত যায় না ধুলে, স্বভাব যায় না মলে (যার যা স্বভাব তা সে কিছুতেই ছাড়তে পারে না) সন্ত্রাসীদের বারবার উপদেশ দিয়েও সুপথে আনা গেলো না আসলে ইল্লত যায় না ধুলে, স্বভাব যায় না মলে।

উ/ঊ

২০. উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে (একের দোষ অন্যের ঘাড়ে দেওয়া) যুদ্ধাপরাধীরা যতই উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে চাকনা কেন, জাতি এবার বিচার চায়।

২১. উঠন্তি মূল পত্তনেই চেনা যায় (ভবিষ্যতের আভাস শুরুতেই মেলে) তুমি জীবনে অনেক বড় হতে পারবে, উঠন্তি মূল পত্তনেই চেনা যায়।

২২. উড়ে এসে জুড়ে বসা (যার ন্যায়সঙ্গত কোন দাবি) ভূমিহীনদের বঞ্চিত করে চৌধুরী সাহেব খাস জমিতে উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন।

২৩. উন বর্ষায় দুনো শীত (অল্প কাজে অধিক লাভ) শেয়ার বাজারে লগ্নি করে মানুষ হঠাৎ বড়লক হবার স্বপ্ন দেখছে, রখানে উন বর্ষায় দুনো শীত।

২৪. উনা ভাতে দুনা বল (অল্প আহার স্বাস্থ্যসম্মত) স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হলে জানতে উনা ভাতে দুনা বল।



২৫. এক ঢিলে দুই পাখি মারা (একসঙ্গে দুই কাজ সমাধা করা) বহুদিনের শত্রুতা ভুলে রহিম জোয়ার্দ্দার সর্দ্দার বংশে ছেলের বিয়ে দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারার পরিকল্পনা করেছেন।

২৬. এক মাঘে শীত যায় না (বিপদ একবার এসেই শেষ হয় না) আমার এ বিপদে আমাকে একলা ফেলে চলে যেও না, মনে রেখ এক মাঘে শীত যায় না।

২৭. এক হাতে তালি বাজে না (সব দ্বন্দ্বেই দুপক্ষের দায়িত্ব থাকে) নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে তোমার কোন লাভ নাই আমরা জানি এক হাতে কখনও তালি বাজে না।



২৮. ওস্তাদের মার শেষরাতে (যথার্থ ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত সফল হয়) জাহিদ শেষ পর্যন্ত নাটক প্রদর্শনীতে আমাদের গ্রুপের মান রক্ষা করল, আসলে ওস্তাদের মার শেষরাতে একথা মিথ্যা না।



২৯. কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না (সাফল্যের পেছনে সাধনার প্রয়োজন) ব্যারিস্টার হবে অথচ পরিশ্রম করবে না, তা কি হয়? কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে?

৩০. কয়লা ধুলে ময়লা যায় না (অসৎ লোক সৎ উপদেশেও কাজ হয় না) কাল টাকা সাদা করলেই কি দুর্নীতিবাজ ভালো হয়, আসলে কয়লা ধুলে ময়লা যায় না।

৩১. কত ধানে কত চাল (পরিণাম) কত ধানে কত চাল একথা বুঝে তার পরে কাজে হাত দাও।

৩২. কথায় চিড়ে ভেজে না (বাকচাতুরিতে সব কাজ হাসিল হয় না) সরকারি দপ্তরে এখন আর কথায় চিড়া ভেজে না কাজের অনুমোদন পেতে নগদ অর্থের প্রয়োজন হয়।

৩৩. কারো পোষমাস কারা সর্বনাশ (কারো সুদিন কারো দুর্দিন) চিরদিন কারো কি সমান যায়, কারো পোষমাস কারো সর্বনাশ এতো প্রকৃতিরই নিয়ম।

৩৪. কাঙালের কথা বাসি হলে ফলে (নগণ্য লোকের কথাও শেষ পর্যন্ত ফলতে পারে) আগেই বলছি ওদের মতো দুষ্ট ছেলের সঙ্গে মেলামেশা করো না-মনে রেখ কাঙালের কথা বাসি হলে ফলে।



৩৫. খাল কেটে কুমির আনা (নিজের জন্য বিপদ সৃষ্টি করা) বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ মতো চলা আর খাল কেটে কুমির নিয়ে আসা সমান কথা।

৩৬. খোদার মার দুনিয়ার বার (প্রাকৃতিক কারণে যা ঘটে তা রোধ করার শক্তি মানুষের নাই) খোদার মার দুনিয়ার বার তাই ভেবে বসে থাকলে তো আর জগৎ সংসার চলবে না মানুষকে কাজ করে যেতেই হবে।

৩৭. খুঁটির জোরে ভেড়া নাচে (শক্তিমানের সাহায্যে শক্তি বৃদ্ধি হয়) শুধু ছাত্রদের দোষারোপ করলে চলবে না, মুরুব্বিরাজনীতিবিদদের আস্কারাতেই নেতাকর্মীরা শিক্ষাঙ্গণে সন্ত্রাস করতে সাহস পায়, খুঁটির জোরে ভেড়া নাচে।

৩৮. খালিকলসি বেশি শব্দ করে (অন্তঃসারশূন্য) টেলিভিশনের টক শোগুলো দেখলে মনে হয় খালিকলসি শব্দ করে বেশি।

৩৯. খিদে পেলে বাঘেও ধান খায় (প্রয়োজনে মানুষ যেকোনো কাজ করতে বাধ্য হয়)রহিমকে শেষ পর্যন্ত আতাহার সাহেবের কাছেই ধর্না দিতে হলো, খিদে পেলে বাঘেও যে ধান খায়।



৪০. গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না (নিজের দেশে গুণীর কদর নাই) আমাদের দেশে গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না বলেই যোগ্য মানুষ গড়ে ওঠে না।

৪১. গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল (গ্রামবাসী না মানলেও নিজেকে কর্তা বলে জাহির করা) কাজ কাম করার নাম নাই গায়ে মানে না আপনি মোড়লের মত দেশ উদ্ধার করতে নেমেছ, তাই না?

৪২. গরু মেরে জুতা দান (নিদারুণ অপমান করে পরে সামান্য উপায়ে তুষ্ট করার চেষ্টা) বড় সাহেবের কাছে কান কথা লাগিয়ে এখন এসেছ সান্তনা দিতে? তোমার গরু মেরে জুতা দানে আমার কোন প্রয়োজন নাই।

৪৩. গাছে তুলে মই কেড়ে নেয়া (আশা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা) যৌথ কারবারে টাকা লগ্নি করবে বলেই ব্যবসা শুরু করেছিলাম, গাছে তুলে এখন তুমি মই কেড়ে নিচ্ছ কেন?

৪৪. গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল (ভবিষ্যতের অতিরিক্ত আশা) গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল লাগিয়ে সময় নষ্ট না করে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ভালভাবে প্রস্তুতি নাও।

৪৫. গোদের ওপর বিষফোঁড়া (ঝামেলার ওপর আরও ঝামেলা) কলেজে পরীক্ষা অন্যদিকে বউয়ের অসুখ আশরাফ সাহেবের গোদের উপর বিষফোঁড়া ওঠার অবস্থা।



৪৬. ঘুঘু দেখেছ ফাঁদ দেখনি (মন্দ লোককে জব্দ করা) ভেবেছ মোটা অংকের লাভের লোভ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে পালাবে, ঘুঘু দেখছ ঘুঘুর ফাঁদ দেখনি, দেখাচ্ছি মজা।

৪৭. ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায় (বিপদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে অল্পতেই শঙ্কিত হওয়া স্বাভাবিক) একবার প্রতারণার শিকার হয়ে লুৎফর আর এনজিওর কথা শুনতে পারে না, ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়।

৪৮. ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো (বিনা লাভে কোন কর্ম করা) আমাদের সমাজে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো লোকের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

৪৯. ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া (গুরুজনদের অগ্রাহ্য করে অর্বাচীনদের মাতব্বরি) বিয়ে করতে হলে ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া বাদ দিয়ে তোমার বাবা মাকেই সঙ্গে নিয়ে এসো।

৫০. ঘোমটার নিচে খেমটা নাচ (বাইরে সাধু ভিতরে খল) আদর্শের কথা ভুলে সমাজে এখন অনেকেই ঘোমটার নিচে খেমটা নাচ নাচতে শুরু করেছে।



৫১. চকচক করলেই সোনা হয় না (বাহ্যিক সৌন্দর্যই প্রকৃত পরিচয় নয়) জিন্স সার্ট পরলেই প্রগতিশীল হয় না, মনের খবর নাও, মনে রেখ চকচক করলেই সোনা হয় না।

৫২. চোরে চোরে মাসতুত ভাই (প্রতারকরা পরস্পরকে সমর্থন করে) উপর উপর বিরোধ দেখালে হবে কী আসলে ওরা সবাই চোরে চোরে মাসতুত ভাই।

৫৩. চেনা বামুনের পৈতা লাগে না (যার যোগ্যতা জানা আছে, তার সম্পর্কে সুপারিশ লাগে না) চেনা বামুনের পৈতা লাগে না, তুমি এসেই কাজে যোগ দাও।

৫৪. চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনি (অসৎ ব্যক্তি ভাল উপদেশ গ্রহণ করে না) দুর্নীতিবাজদের কাল টাকা সাদা করতে বলে লাভ কী, চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনি এতো জানা কথা।



৫৫. ছেলের হাতের মোয়া (সহজলভ্য বস্তু) শিক্ষানীতি ছেলের হাতের মোয়া নয়, তার জন্য জাতীয় আদর্শ নির্ধারণ করার প্রয়োজন হয়।

৫৬. ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি (দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির জন্য ব্যাকুলতা) ভর্তি বাণিজ্যের এ যুগে নেতা-পাতিনেতাদের চাপে আশরাফ সাহেব একেবারে কাহিল-তাঁর এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা।

৫৭. ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা (অসম্ভব কল্পনা করা) সরকারি চাকরি করে ঢাকা শহরে বাড়ি বানানোর চিন্তা করা আর ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা সমান কথা।



৫৮. জলে কুমির ডাঙায় বাঘ (উভয় দিকে বিপদ) একদিকে সন্ত্রাসীদের হুমকি অন্যদিকে পুলিশের নজরদারি আমারতো জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ অবস্থা।

৫৯. জাতে মাতাল তালে ঠিক (বেহিসেবির মতো দেখালেও প্রকৃতপক্ষে হিসেবি) ছন্নছাড়ার মত জীবন যাপন করলেও রশিদ ঢাকায় ফ্ল্যাট এবং ব্যাংকে মোটা অংকের সঞ্চয় করে রেখেছে। আসলে সে জাতে মাতাল তালে ঠিক।

৬০. জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে বিবাদ (প্রভাবশালী ব্যক্তির অধীনে থেকে তার সঙ্গে বিবাদ) প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে বসের সঙ্গে পোদ্দারি করা আর জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে বিবাদ করা সমান কথা।

৬১. জ্বলন্ত আগুনে ঘি দেওয়া (উত্তেজনা বৃদ্ধি করা) চাকরি হারিয়ে যারা অনশন করছে তাদের উপর লাঠিচার্য করে পুলিশ জ্বলন্ত আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে।



৬২. ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি ফলে (কাজ আপনা আপনি হয়ে যায়, চালাক লোক বাহাদুরি নেয়) কার সুপারিশে চাকরি হলো বোঝা দায়, আসলে ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি ফলে।

৬৩. ঝিকে মেরে বউকে শেখানো (ইশারায় তিরস্কার) ঝিকে মেরে বউকে শেখানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী ছাত্রনেতাদের তিরস্কার করলেন, আসলে তাঁর লক্ষ্যই ছিল মন্ত্রীরা।

৬৪. ঝোপ বুঝে কোপ মারা (সুযোগের সদ্ব্যবহার করা) সবাই তোমার মত অথর্ব নয়, ঝোপ বুঝে কোপ মারার লোকের এখন অভাব নাই।



৬৫. টাকায় বাঘের দুধ মেলে (অর্থের জোরে সবকিছু করা যায়) টাকায় এখন বাঘের দুধ মেলে আর তুমি কিনা অফিস ডেকোরেশনের চিন্তায় দিশেহারা হতে বসেছ।



৬৬. ঠেলার নাম বাবাজি (চাপে পড়ে কাবু হওয়া) যত ক্ষমতাধারী স্বৈরাচারীই হোক না কেন জনগণের দাবির কাছে নতি স্বীকার করতেই হবে। যান না যে ঠেলার নাম বাবাজি।



৬৭. ডানায় ভর দিয়ে চলা (শূন্যলোকে ভাসা) পরীক্ষা শেষ করেতো ডানায় ভর দিয়ে চলছ, ভর্তি কর্ম অনুশীলন নিতে হবে সে কথা কী ভুলে গেছ?

৬৮. ডুবে ডুবে জল খাওয়া (গোপনে কাজ করা) ডুবে ডুবে জল খেয়ে যে আমার বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র করছে একথাতো ঘুর্ণাক্ষরেও জানতে পারেনি।



৬৯. ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে (সবখানে একই কাজ করা) ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে মাস্টারি করি বলে বিয়ে বাড়িতে এসেও অংক কষতে হবে একথা প্রমাণ করার জন্য?

৭০. ঢিলটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় (পরের অনিষ্ট করলে নিজেরও অনিষ্ট হয়) কারো বিরুদ্ধে কুৎসারটানোর আগে ঢিলটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় প্রবাদটি স্মরণে রেখ।

৭১. ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার (শূন্য হাতে বাহাদুরি) বল নাই ব্যাট নাই বাবু চললেন খেলতে, যেন ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দ্দার।



৭২. তিলকে তাল করা (সামান্য বিষয়কে বাড়িয়ে গুরুতর করা) দুইবন্ধুর মনোমালিন্য নিয়ে তিলকে তাল না বানিয়ে মিটমাট করে নাও, তাতেই মঙ্গল।

৭৩. তেলা মাথায় তেল দেওয়া (ধনীর খোশামোদ করা) তেলা মাথায় তেল দেওয়া মানুষেরই স্বভাব, চৌধুরী সাহেবের কথা বাদ দিয়ে আমার মত অভাজনের কথা তুমি কেন রাখবে?



৭৪. দশের লাঠি একের বোঝা (দশজনের পক্ষে যা করা সহজ একজনের পক্ষে তা করা অতি কঠিন) দশের লাঠি একের বোঝা এ কথা মনে রেখেই গণ শিক্ষা বিস্তার কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।

৭৫. দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ (ঐক্যবদ্ধ হওয়াই আসল কৃতিত্ব) ‘দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ’ এই মন্ত্রে জেগে ওঠ-এসো আরো একবার রুখে দাঁড়াই অশুভ চক্রের বিরুদ্ধে।

৭৬. দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পোষা (শত্রুকে যত্নে লালন পালন করা) যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করা আর দুধকলা দিয়ে কালসাপ পোষা সমান কথা।

৭৭. দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল (দুর্জন সঙ্গীর চেয়ে নিঃসঙ্গ থাকা অধিকতর বাঞ্ছনীয়) অনেক দিনইতো দেখা হলো এবার তোমরা বিদায় হও, আমার জন্য দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়ালই ভাল।

৭৮. দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো (ভালোর অভাব মন্দ দিয়ে পূরণ) অতিথি শিল্পীর অনুপস্থিতিতে স্থানীয়দের দিয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করে আয়োজকেরা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালেন।



৭৯. ধরি মাছ না ছুঁই পানি (দায়িত্ব পালন না করে সুখ ভোগ) বুড়ো বাবার কাঁধে চাপিয়ে আর কত দিন ধরি মাছ না ছুঁই পানি করে সংসার চালাবে, এবার নিজের কাঁধে বোঝা নাও।

৮০. ধর্মের কল বাতাসে নড়ে (সত্য আপনা আপনিই প্রকাশ পায়/ অন্যায়ের শাস্তি দৈবক্রমেই হয়) স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে শেষ রক্ষা হলো না রহিমের, আসলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।

৮১. ধরাকে সরা জ্ঞান করা (অহঙ্কারী হওয়া) এখন এমন পাশের ছড়াছড়ি আর তুমি কিনা আই এ পাশ করেই ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছ?



৮২. নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা (নিজের অপারগতা অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা) মামা খালু না থাকলে শুধু যোগ্যতাই চাকরি হয় না একথা বল না, নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা সবাই বলে।

৮৩. নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল (একেবারে না থাকার চেয়ে কম থাকা ভাল) অভাবের সংসারে আর কিছু না থাক-মাথা গুজার ঠাঁইটুকুই তো নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল।

৮৪. নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো (নিশ্চিন্তে দিন কাটানো) প্রতিযোগিতার এ বাজারে নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো বাদ দিয়ে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোল।

৮৫. নুন আনতে পান্তা ফুরায় (প্রবল দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটানো) নুন আনতে পান্তা ফুরায়, আমাদের কী বড়লোকি চাল মানায়?



৮৬. পাকা ধানে মই দেওয়া (প্রায় সমাপ্ত কাজ নষ্ট করা) তোমার সম্মতি পেলেই বিয়েটা হয়ে যাবে, তুমি আবার পাকা ধানে মই দিও না।

৮৭. পচা শামুকে পা কাটা (তুচ্ছ কারণে বিপন্ন হওয়া) মৌলবাদিদের কথায় নাটক বন্ধ করব কেন? পচা শামুকে পা কাটলে কি কেউ হাঁটা বন্ধ করে?



৮৮. ফাঁদে পা দেওয়া (চক্রান্ত না বুঝে বিপদে পড়া) বিশ্বাস করে ফাঁদে পা দিয়েছ এখনতো প্রায়শ্চিত্ত করতেই হবে।

৮৯. বানরের গলায় মুক্তোর মালা (অযোগ্য লোককে মূল্যবান বস্তু দান) ওর মতো অসৎ ছেলের সঙ্গে বোনের বিয়ে দেয়া আর বানরের গলায় মুক্তোর মালা দেয়া সমান কথা।

৯০. বামন হয়ে চাঁদে হাত (সাধারণ ব্যক্তির অসাধারণ বস্তু লাভের আশা) টাকার খেলায় নির্বাচনে গরিবের প্রার্থী হতে চাওয়া বামন হয়ে চাঁদে হাত দিতে চাওয়া সমান কথা।



৯১. ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ (বাজে কাজে অর্থ ব্যয় করা) তার লেখা পড়ার জন্য টাকা খরচ করা আর ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ সমান কথা, তার চেয়ে ভাল এখন থেকেই কোন কাজে লাগিয়ে দাও।

৯২. ভিটেয় ঘুঘু চড়ানো (চরম সর্বনাশ করে দেওয়া) নির্বাচনে জয়ী হয়েই প্রতিশোধ নিতে বিরোধী পক্ষের ভিটেয় ঘুঘু চড়ানোর রেওয়াজ শুরু হয়েছে আমাদের দেশে।



৯৩. মায়ের কাছে মামার বাড়ির গল্প (কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ লোককে সে বিষয়ে নতুন করে জানানোর চেষ্টা) দলছুট পান্ডাদের কথা আমাকে আর নতুন করে বলতে হবে না, আমি সবই জানি, মায়ের কাছে মামার বাড়ির গল্প করে কী লাভ?

৯৪. মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া (কিংকর্তব্যবিমূঢ় হওয়া) বিদেশে যাওয়ার টাকা ফেরৎ না পেয়ে কুদ্দুসের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল।

৯৫. মেঘে মেঘে বেলা হওয়া (বয়স বেড়ে যাওয়া) মেঘে মেঘে বেলা বেড়ে গেছে এবার সংসারের দায়িত্বটি কাঁধে নাও।



৯৬. যত গর্জে তত বর্ষে না (শূন্য আস্ফালন) বাচাল মানুষকে কেউই সহজে বিশ্বাস করতে চায় না বরং ভাবে যত গর্জে তত বর্ষে না।

৯৭. যত দোষ নন্দ ঘোষ (দুর্বলের ওপর সবকিছুর দোষ চাপানো) অফিসে যাই হোক না কেন সবাইত পিয়নটাকেই সন্দেহ করে যেন যত দোষ নন্দঘোষ।

৯৮. যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা (ধৃষ্টতা) হাসিব সাহেব অফিসের পিয়নের যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা শুনেরীতিমত বিস্মিত হলেন।

৯৯. যেমন বুনোরল তেমনি বাঘা তেঁতুল (বড় অপরাধীর কঠিন শাস্তিদাতা) যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি কোন করুনা নয়, বরং যেমন বুনোরল তেমন বাঘা তেতুল হতে হবে।

১০০. যে সহে সে রহে (ধৈর্যধারণ করে থাকতে পারলে কখনও বিনাশ হয় না) অল্পতে অতিষ্ট হয়ো না, মনে রেখ যে সহে সে রহে।

১০১. যেমন কুকুর তেমন মুগুর (যার যেমন স্বভাব, তাকে সেভাবে শায়েস্তা করা) দুষ্টের দমন করতে যেমন কুকুর তেমন মুগুর না হলে চলে না।



১০২. রতনে রতন চেনে (এক মন্দ ব্যক্তি আরেক ব্যক্তির মন্দত্ব সহজেই বোঝে) আজহারই পারবে ফেরদৌসের কুকীর্তির তথ্য হাজির করতে কারণ রতনে রতন চেনে।

১০৩. লাভের গুড় পিঁপড়েয় খায় (সামান্য লাভ করতে গিয়ে অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া) বেশি লোভ করো না, শেষে লাভের গুড় পিঁপড়ে খাবে।



১০৪. শাক দিয়ে মাছ ঢাকা (ব্যর্থ চেষ্টা করা) অপরাধ করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করো না, তাতে বরং অমঙ্গলই হবে।

১০৫. শাপে বর হওয়া (যা মন্দ ভাবা হয়েছিল আসলে তা ভাল হওয়া) কুৎসা রটিয়ে বিরোধী পক্ষের কোন লাভ হলো না বরং সত্য জেনে এখন আফসার সাহেবকেই সবাই বাহবা দিচ্ছে-একেই বলে শাপে বর হওয়া।

১০৬. শিকারি বেড়াল গোঁফ দেখে চেনা যায় (হাবভাব দেখেই উদ্দেশ্য বোঝা যায়) অভিজ্ঞ মানুষ মানুষ চিনতে ভুল করে না কারণ শিকারি বেড়াল গোঁফ দেখে চেনা যায়।



১০৭. সাবধানের মার নাই (সতর্কতার বিপদ নাই) সাবধানের মার নাই-বাক্যটি প্রবাস জীবনে স্মরণ রেখ।

১০৮. সাতেও নাই পাঁচেও নাই (নিরপেক্ষ) সংসারে সাতেও নাই পাঁচেও নাই এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর।

১০৯. হক কথার মার নাই (সত্য কথা বললে লাভবান হওয়া যায়) আলোকিত মানুষ মাত্রই জানে, হক কথার মার নাই।

১১০. হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা (সুযোগ গ্রহণ না করা) হাতের লক্ষ্মী পায়ে না ঠেলে চাকরিটাই আপাতত যোগদান কর।

☞ এই পোষ্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন☞জিজ্ঞাসা☞সমস্যা☞তথ্য জানার থাকে তাহলে আপনি☞কমেন্ট করলে আপনাকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব☞☞☞ "বাগধারা"

Post a Comment

যোগাযোগ ফর্ম

Name

Email *

Message *

 BIPLOB BLOGGER

প্রতিদিন সকল ধরনের চাকরির খবর আপডেট পেতে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করবে এবং আপনি যদি এন্ড্রয়েড মোবাইলে আপনার চাকরির বিজ্ঞপ্তি গুলো পেতে চান তাহলে আমাদের একটি অ্যাপস রয়েছে সেটি নিচের দেওয়া লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন

বাংলাদেশ রেলওয়েতে একটি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে পদের 
নামঃ খালাসী 
পদ সংখ্যা:-১০৮৬ জন
আবেদনের শেষ তারিখ:-২৬ই জানুয়ারি ২০২২।  ও বিস্তারিত জানুন নিচের দেওয়া ভিডিওটিতে