বানান ও বাক্য শুদ্ধি

বানান ও বাক্য শুদ্ধি


কথার শুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য যেমন শুদ্ধ উচ্চারণ দরকার হয় তেমনি ভাষার শুদ্ধতা বজায় রাখান জন্য দরকার প্রমিত বানান। এই উদ্দেশ্যে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বানান প্রশ্নে আওতায় আনা হয়েছে।
বানন সময়োপযোগী হয়ে থাকে। শব্দের প্রমিত বর্ণ বিশ্লেষণ হলো বানান। সংস্কৃত বর্ণন থেকে বানান এসেছে যার অর্থ শব্দের মধ্যকার বর্ণসমূহের বিশ্লেষণ বা ক্রমিক বর্ণন (বর্ণ+অন)। শব্দের উৎপত্তি, অর্থ ও গঠন অনুসারে শব্দের প্রমিত লিখিত রূপকে বানান বলে। Spelling is the act of naming the letters of words অর্থাৎ বানান হলো শব্দে অবস্থানরত বর্ণের লিখিত নিয়ম। শব্দ বিভিন্ন ভাষা থেকে আসে বলে বানান মনে রাখা কষ্টসাধ্য। বানান একটি পদ্ধতি তাই সর্তকতার সাথে পাঠ করে মনে রাখতে হয়। উচ্চারিত শব্দের লিখিত রূপই বানান তাই শব্দের উচ্চারণ ও লিখিত রূপ এক হয় না। যেমন: অণু/ওনু, কবি/ কোবি, বধূ/বোধু, স্বাগতম/ শাগোতোম, পদ্ম/পোদদো, আত্মা/আততা, সমাস/শমাশ ইত্যাদি। তবে প্রায় নির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমেই এমনটি হয়ে থাকে। বাংলা বানানের নির্দিষ্ট রূপ দেয়া যায় না বলে বানানকে ‘প্রমিত বানান’ বলা হয়। শব্দের উৎপত্তি, গঠন ও উচ্চারণ অনুসারে সময়োযোগী করে লিখিত বানানকে প্রমিত বানান বলে।

বানান অপ্রমিতের কারণ
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বানান লেখাটাই প্রমিত বানান। বিভিন্ন কারণে বানান অপ্রমিত হতে পারে। যেমন :
১. শব্দের উৎপত্তিগত কারণে বানান অপ্রমিত হয়। সংস্কৃত শব্দের বানান যেমন তেমন না তদ্ভব, দেশি, বিদেশি শব্দের বানান। যেমন: বৈশাখী, বোশেখী, সূয্যী, সন্ধ্যে, ঠাণ্ড, ইঞ্জিন, নামায, টিস্যু, গ্যেটে, একাডেমী।
২. শব্দের গঠনগত কারণে বানান অপ্রমিত হয়। যেমন : শ্রেণী, প্রাণীবিদ্যা ইত্যাদি।
৩. বানান বিধানগত কারণে বানান অপ্রমিত হয়। যেমন : প্রমান, লজ্জাস্কর, স্বত্ত্ব।
৪. কার ও ফলা, যুক্তবর্ণ ভুল ব্যবহারের কারণে বানান অপ্রমিত হয়। যেমন : করল—করলো, জ্যোতি—জ্যোতি, বক্ষ-বহ্ম, অপরাহ্ন।
৫. সমার্থক বা সমোচ্চারিত শব্দ ভুল ব্যবহারের কারণে বানান অপ্রমিত হয়। যেমন : হিরণ—কিরণ—জ্যোতি, অংশ—অংস, অশ্ম—অশ্ব,
৬. উচ্চারণগত কারণে বানান অপ্রমিত হয়। যেমন : কলোম, করছিলো, কোরবো, রাসূল, সূরা, ইস্যু, টিশ্যু ইত্যাদি।
৭. সমধ্বনি বা বর্ণের ভুল ব্যবহারের কারণে বানান অপ্রমিত হয়। যেমন : অ—ও—য়, আ—য়া, ই—ঈ, উ—ঊ, জ-য, ঙ—ং, ত—ৎ, ত্ত—ত্ত্ব—ত্য—ত্ম, ণ—ন—ঞ, র-ড়-ঢ়, শ—স—ষ ইত্যাদি।
৮. শব্দের উৎপত্তি ও গঠন অনুসারে ‘ই/ঈ/উ/ঊ-কার’, ‘ঙ/ং’, চন্দ্রবিন্দু, বিসর্গ বা য-ফলা হয়ে থাকে। সেহেতু এগুলোর সঠিক ব্যবহার জানা দরকার। শব্দের উৎপত্তি ও গঠন অনুসারে ণত্ব (ণ/ন), ষত্ব (ষ/স/শ), রত্ব (র/ড়/ঢ়), জত্ব (জ/য), তত্ব (ত/ৎ) ইত্যাদি বানান ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
৯. উচ্চারণ অনুসারে বানান লিখলে তা প্রমিত হয় না। যেমন : কলোম, কলোস, করছিলো, কোরবো ইত্যাদি।
১০. অযাচিত ভুল ব্যবহার করে বানান অপ্রমিত বরা হয় (আ-কার বা ও-কার)। যেমন: ‘আম’ শব্দকে ‘অম’ লেখা। ‘করল’ শব্দকে ‘করলো’ লেখা।
১১. সঠিক নিয়ম অমান্য করে বানান অপ্রমিত করা হয়। ইন-প্রত্যয়জাত শব্দ ঈ-কার দিয়ে লেখা হয়। যেমন : জ্ঞানী, গুণী, গাভী। ইন-প্রত্যয়জাত শব্দ ই-কার দিয়ে লেখা হয়। যেমন : গ্রন্থি, দায়ি, শ্রেণি।
🌶🌶🌶🌶
বানান প্রমিতকরণের উপায়
অনেক ভাষা (অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, আর্য বা বৈদিক, সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, অপভ্রংশ, দেশি, আঞ্চলিক ও বিদেশি) থেকে আগত শব্দের বানান হতে পারে। আবার শব্দের গঠন ও উচ্চারণগতভাবেও বানান হতে পারে। ভাষা হলো সংস্কারের ফসল।
আঞ্চলিক ভাষা হলো চলিত ভাষার সংস্কার। চলিত ভাষা হলো সাধুভাষার সংস্কার। সাধুভাষা হলো সংস্কৃত ভাষার সংস্কার। সংস্কৃত ভাষার হলো তৎসম ভাষার সংস্কার। তৎসমভাষা হলো বৈদিক ভাষার সংস্কার। এই যে ধারাবাহিক সংস্কার তা বহু বছরের, বহু কালের, বহু শতাব্দীর। সমস্ত বানানকে তিনটি উপায়ে প্রমিত করা যেতে পারে।
শব্দের উৎপত্তিগত বানান
সংস্কৃত শব্দ, খণ্ডসংস্কৃত শব্দ, তদ্ভবশব্দ, আঞ্চলিক শব্দ, দেশি শব্দ, প্রাদেশিক শব্দ, বিদেশি শব্দ ও পারিভাষিক শব্দ অনুসারে শব্দের বানান নির্ধারণ হতে পারে। যেমন:
সংস্কৃত শব্দ
সংস্কৃত শব্দের বানান অপরিবর্তিত থাকে। যেমন: গাত্র, কর্ণ, বৃক্ষ, মৎস্য, স্বর্ণ, ক্ষেত্র, করিতেছি, করিতেছিলাম।
খণ্ডসংস্কৃত শব্দ
খণ্ডসংস্কৃত শব্দের বানান পরিবর্তনশীল। যেমন: গতর, গিন্নি, কান, গাছ, মাছ, সোনা, খেত, করছি, করছিলাম।
তদ্ভব শব্দ
তদ্ভব শব্দের বানান পুরোটাই পরিবর্তিত রূপ ধারণ করে। ঈ-কার হয়ে যায় ই-কার। ঊ-কার হয়ে যায় উ-কার। ণ-হয়ে যায় ন। য-ফলা থাকে না। যেমন: বোশেখি, কুমির, সুয্যি/সুজ্জি, সোনা, বরন, কিষান, সন্ধে।
আঞ্চলিক শব্দ
আঞ্চলিক শব্দের বানান পুরোটাই পরিবর্তন হয়। যেমন: হাত>ড্যানা, ষাঁড়>হাড় ইত্যাদি।
দেশি শব্দ : দেশি শব্দের বানান নিজস্ব রূপে থাকে। যেমন: কুলা, চুলা, কুড়ি।
প্রাদেশিক শব্দ
সংস্কৃত বাদে ভারতবর্ষের অন্যান্য অঞ্চলের শব্দ বাংলা প্রবেশ করেছে পরিবর্তিত রূপে। প্রাদেশিক শব্দে ঙ/ছ/য/ণ/ষ/ঞ্জ/ঞ্চ/ঈ-কার/ঊ-কার বসে না। যেমন: হিন্দি: কাহিনি (কাহানি), ঠান্ডা (ঠান্ডি)।
বিদেশি শব্দ
বিদেশি শব্দের বানান পুরোটাই পরিবর্তিত রূপ ধারণ করে। ‘আ’ না হয়ে ‘য়া’ হয় তবে ‘কোরআন’সহ কয়েকটি বানানে ‘আ’ লেখা হয়। শব্দের শেষে ‘হ’ বসে না তবে ‘আল্লাহ’ শব্দে বসানো হয়। ‘ঈ-ঊ’ না হয়ে ‘ই/উ’ হয়। ‘ঙ/ছ/ঞ্জ/ঞ্চ/ণ/ণ্ট/ ণ্ড/ষ্ট’ ইত্যাদির পরিবর্তে স/শ/নজ/নচ/ন/ন্ট/ন্ড/স্ট’ হয়। কিন্তু এখনও ‘ঙ/ছ/ঞ্জ/ ঞ্চ/ণ/ণ্ট/ ণ্ড/ষ্ট’ দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন: চীন, লুঙ্গি, ডেঙ্গু, ঝাণ্ডা, ঠাণ্ডা, লণ্ঠন, মিছরি, পছন্দ, তীর (ধনুক), ইঞ্জিনিয়ার, সেঞ্চুরী, বাঙ্কার, খ্রিষ্টার্ন, যিশু ইত্যাদি। সকল প্রাদেশিক ও বিদেশি শব্দে ঈ-কার না বসে ই-কার বসে। যেমন: শুমারি, আমদানি, খানদানি, খুশকি, খুশি, বন্দি, , জমি, জামদানি, জিন্দাবাদ, জিন্দেগি, দরজি, দাগি, বিরিয়ানি, মুরগি, আবির, আমিন, আসামি, গরিব, কেরানি, দাদি, নানি, চাচি, মাসি, ভাবি, কাহিনি, কোম্পানি, জানুয়ারি। এখনও লেখা হচ্ছে : জঙ্গি, জিঞ্জির, সেঞ্চুরি, চৌধুরী। চীন, লুঙ্গি, ডেঙ্গু, ঝাণ্ডা, ঠাণ্ডা, লণ্ঠন, মিছরি, পছন্দ, তীর (ধনুক), ইঞ্জিনিয়ার, সেঞ্চুরী, বাঙ্কার, খ্রিষ্ট, খ্রিষ্টার্ন, যিশু।
পারিভাষিক শব্দ
রূপ, রস, গন্ধ, কাজ অনুসারে বিশেষ অর্থ প্রকাশের জন্য ইংরেজি শব্দ অনুবাদ করা হয়। এসব শব্দের বানান উৎপত্তিগত ও গঠনগত হতে পারে। যেমন : সিলেবাস—পাঠ্যসূচি, আইন—অ্যাক্ট, অক্সিজেন—অম্ল।
শব্দের গঠনগত বানান
সাধারণত গঠনগত বানান সব সময়ই অপবির্তনশীল। সন্ধি, সমাস, প্রত্যয়, উপসর্গ, বিভক্তি, শব্দদ্বিত্ব, বচন, নির্দেশক, শব্দ রূপান্তর ইত্যাদির অনুসারে বানান নির্ধারণ হতে পারে। যেমন:
সন্ধি
বর্ণের মিলনে, বর্ণে বিকৃতিতে বা বর্ণ লোপে শব্দের বানান সঠিক করা যায়। যেমন :
*ঈ, ঊ, উৎ—জ্জ/জ্জ্ব, ঃ—র/ষ ইত্যাদি নিয়মে সন্ধিজাত শব্দ হয়। যেমন: রবীন্দ্র (বরি +ইন্দ্র), কটূক্তি (কটু+উক্তি), অহরহ (আহঃ+অহ), আবিষ্কার, পুরস্কার, উৎ+চারণ=উচ্চারণ, অতঃ+ এব= অতএব, উৎ+স্থান=উত্থান, ইতি+ মধ্যে = ইতোমধ্যে।
*নিয়মহীনভাবে সন্ধিজাত শব্দ হতে পারে। যেমন : এক+দশ=একাদশ, গো+অক্ষ= গবাক্ষ ইত্যাদি।
সন্ধি শব্দ গঠনের শক্তিশালী মাধ্যম তবে সংস্কৃত ও সংস্কৃত শব্দে সন্ধি করতে হয়। সংস্কৃত ও বাংলা শব্দের সন্ধি হয় না। উচ্চারণে সুবিধা করতে গিয়ে শব্দকে অশুদ্ধ করা ঠিক নয়। সন্ধির নিয়মে বাক্য শুদ্ধতা রজায় রাখা যায়। যেমন : অর্থাভাবে—অর্থ অভাবে, লজ্জাস্কর—লজ্জা কর/লজ্জাজনক, দুরাবস্থা—দুরবস্থা, উল্লে¬খিত—উল্লি¬খিত, উপরুক্ত/উপরোক্ত— উপরিউক্ত, সম্বর্ধনা— সংবর্ধনা, কিম্বা—কিংবা, ইতিমধ্যে—ইতোমধ্যে ইত্যাদি।
বর্ণ রূপান্তরিত বানান
ধ্বনি বা বর্ণের পরিবর্তনগুলো লক্ষ করা যায় :
১. স্বরাগম : প্রথম বা মাঝে স্বরে ব্যঞ্জনের আগমন ঘটে। যেমন : স্কুল>ইস্কুল, কর্ম> করম।
২. স্বর সংগতি : স্বরের সংগতি রেখে স্বরের আগমন ঘটে। যেমন : রুপা>রুপো, শিয়াল >শেয়াল।
৩. অপিনিহিতি : মাঝে ই যোগ হয়। যেমন : ডাল>ডাইল, চাইল, কাইল, আইজ ।
৪. অভিশ্রুতি : মাঝে ই যোগ হয়। যেমন : কন্যা>কইন্যা>কনে, আজি> আইজ>আজ।
৫. সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : মধ্যধ্বনি লোপ পায়। যেমন : উদ্ধার>উধার, রাত্রি> রাতি।
৬. অন্তর্হতি : মধ্যধ্বনি বাদ যায়। যেমন : ফাল্গুন>ফাগুন, বাহির>বার।
৭. ব্যঞ্জনচ্যুতি : মধ্য বা শেষ ধ্বনি বাদ যায়। যেমন: বড়দাদা>বড়দি, ছোটদি/ ছোটদা।
৮. ধ্বনি বিপর্যয় : মধ্যধ্বনির পরিবর্তন হয়। যেমন : রিকশা>রিশকা, পিশাচ>পিচাশ, সচেতন >সতেচন, লাফ>ফাল।
৯. বিষমীভবন : র ও ল এর বিপর্যয় ঘটে। যেমন : শরীর>শরীল, লাল>নাল।
১০. ব্যঞ্জন বিবৃতি : নতুন ব্যঞ্জনবর্ণ বসে। যেমন : কবাট>কপাট, ধাইমা> দাইমা।
১১. অসমীকরণ : মাঝে আ-কারের আগমন ঘটে। যেমন : টপটপ> টপাটপ।
১২. সমীভবন : শেষে বর্ণ দ্বিত্ব হয়। যেমন : পদ্ম>পদ্দ, গল্প>গপ্প।
১৩. দ্বিত্ব ব্যঞ্জন : মাঝে দ্বিত্ব ব্যঞ্জনবণের্র আগমন ঘটে। যেমন : সকাল>সক্কাল, ছোট> ছোট্ট, কিছু>কিচ্ছু।
১৪. র—লোপ পায়: রেফ, ই-কার ও ‘হ’ উঠে দ্বিত্ববর্ণ বসে। যেমন: তর্ক>তক্ক, গৃহিণী> গিন্নি।
১৫. হ—লোপ পায় : হ-লোপ পেয়ে ই বা য় বসে। যেমন : মহাশয়>মশাই, চাহে> চায়।
১৬. অ—শ্রুতি : মাঝের য় উঠে যায়। যেমন : মায়ের>মার।
১৭. অন্তস্থ-ব শ্রুতি : মাঝের ও উঠে যায়। যেমন : নেওয়া>নেয়া, দেওয়া>দেয়া।
সমাস
সমাস অর্থ সংক্ষেপ বা মিলন। পরস্পর অর্থবোধক দুই বা অধিক শব্দ বা পদের মিলনকে সমাস বলে। পাশাপাশি দুই বা তার অধিক শব্দ বা পদ থাকতে হবে, এসব শব্দ বা পদের মধ্যে অর্থসংগতি থাকতে হবে, এসব শব্দ বা পদের মধ্যে বৃহৎ শব্দ বা পদ তৈরির যোগ্যতা থাকতে হবে, নতুন শব্দ বা পদ গঠন করার ক্ষমতা থাকতে হবে, একাধিক শব্দ বা পদকে সংকোচিত করার ক্ষমতা থাকতে হবে, শব্দ বা পদগুলোর বিভক্তি লোপ পেতে হবে, গঠিত শব্দ একশব্দ অথবা মাঝে হাইফেনযুক্ত হবে। এসব বৈশিষ্ট্য নিয়ে গঠিত হয় সেগুলোই সমাস।
শব্দ সংক্ষেপণের মাধ্যমে বানান সঠিক করা যায়। যেমন :
*বিশেষ্য-বিশেষ্য বা বিশেষণ সমাসের নিয়মে একশব্দ হয়। যেমন : ছেলেমেয়ে, ছাত্রছাত্রী, ভাইবোন, বড়দিদি, বড়ভাই ইত্যাদি।
*আলাদা অথবা হাইফেন অথবা একসাথে লেখা হচ্ছে। যেমন : তাছাড়া, এজন্য, এক্ষেত্রে, সেই, তাই।
*সমামবদ্ধ কিন্তু ঈ-কার দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন : কীভাবে, কীসের, কীরূপ, কীজন্য, নারীচিহ্ন, পথিবীব্যাপি, নদীমাতৃক ইত্যাদি।
*সমামবদ্ধ কিন্তু ই-কার দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন: প্রাণিজগৎ, প্রাণিবিদ্যা, মন্ত্রিসভা ইত্যাদি।
*হাইফেন বা শব্দযোজকচিহ্ন দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন: নারী-চিহ্ন, পৃথিবী-ব্যাপি, নদী-মাতৃক ইত্যাদি।
সমাসযোগে শব্দ গঠিত হলে এদের বানান তেমন পরিবর্তন না হলেও শুধু মাঝের ঈ-কার ইকারে পরিণত হয়। যেমন: প্রাণিজগৎ, প্রাণিবিদ্যা, নারিচিহ্ন, মন্ত্রিসভা। আবার শব্দযোজকচিহ্ন (হাইফেন) দিন বা না দিয়েও লেখা যায়। যেমন: ছেলে ও মেয়ে/ছেলেমেয়ে, কুসুমের মতো কোমল/ কুসুমকোমল, মন রূপ মাঝি/মনমাঝি, শহিদদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত মিনার/শহিদমিনার।
*‘স্ব’ অর্থ নিজের আর ‘সহ’ অর্থ সাথে। যেমন : স্বজাতি হলো নিজের জাতি আর সজাতি হলো জাতিসহ।
*দুটি শব্দে বিভক্তি, নির্দেশক, প্রত্যয় (ই/ঈ/ইতা-প্রত্যয় বাদে), সন্ধি, উপসর্গ যোগ করলে বানানের এমন কী বর্ণের কোনো পরিবর্তন হয় না। যেমন : নারীকে, নারীতে, নারীটি, নারীগুলো, নারীগণ।
*বনজ—যা বনে জন্মে সমাসের নিয়ম অনুসারে লেখা যায়। কিন্তু ‘ফলজ’ ভুল ব্যবহার। এটির সঠিক ব্যবহার হলো ‘ফলদায়ী গাছ’।
উপসর্গ
উপসর্গ শব্দের আগে বসিয়ে নতুন শব্দ গঠন করা যায় আবার শব্দের বানানও সঠিক করা যায়। যেমন :
*নিঃ+র হলে ঈ-কার হয়। যেমন : নীরস (নিঃ+রস), নীরব ইত্যাদি।
*নিঃ+অন্যবর্ণ হলে ই-কার বসে। যেমন : নির্গমন (নিঃ+গমন), নির্ভর ইত্যাদি।
*নিঃ+অ/আ থেকে ‘র’ হলে ই-কার হয়: নিরপরাধ (নিঃ+অপরাধ)।
*উপসর্গের পরে হাইফেন/শব্দযোজক বসে না তবুও বসানো হচ্ছে। যেমন : উপশহর, উপ-পরিচালক, সাবটেক্স, সাব-কনট্রাক্ট।
*‘অ’ যদি নাবোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাহলে সেই শব্দের শেষে ‘হীন’ যুক্ত হয় না। যেমন : অসচেতনহীনভাবে, অক্লান্তিহীনভাবে।
*শব্দ ভাঙ্গলে ‘সু’ পাওয়া যায় বলে ‘সুস্বাগত’ না হয়ে হবে ‘স্বাগত’ (সু+আগত)
*দুর/দূর : দুর উপসর্গ। যেমন : দুরন্ত, দুরূহ : দুরূহ (দুর+ঊহ) কঠিন, কষ্টসাধ্য। আর দূর (দূরত্ব)। দুরারোগ্য (দূরারোগ্য নয়)।
যাদের নিজস্ব কোনো অর্থ নাই তবে অন্য শব্দের আগে বসে নতুন শব্দ গঠন করতে পারে। যেমন: আ-গাছা, নি-নিখুঁত, নির-নীরব, প্র-প্রধান, পরা-পরাজয় ইত্যাদি।

বিভক্তি
যাদের নিজস্ব কোনো অর্থ নাই তবে অন্য শব্দের (ধাতু ও নামশব্দ) পরে বসে নতুন শব্দ গঠন করতে পারে। যেমন: করব, গাইছি, বলছি, আমরা, রহিমরা।
‘এ, য়, তে, কে, র, এর’ ইত্যাদি সঠিকভাবে ব্যবহার করে শব্দের বানান ঠিক করা যায়। যেমন:
*যোজকযুক্ত শব্দের আগে ও পরে দুটি শব্দতেই বিভক্তি বসে। যেমন : দুধে ও ভাতে, স্কুলে ও কলেজে, দুধভাত/দুধেভাতে ।
*‘অ’ হলে বিভক্তি ‘এর’ সবে। যেমন : হাসানের, করিমের ইত্যাদি।
*‘আ’ হলে বিভক্তি ‘র’ বসে। যেমন : হাসিনার, রহিমার ইত্যাদি।
*দুটি বিভক্তি একটি শব্দের বসে না। যেমন : বুকেতে, চোখেতে ইত্যাদি।
*সংস্কৃত শব্দ হলে বিভক্তি বসে না। কিন্তু বাংলা শব্দ হলে বিভক্তি সে। যেমন : মাতৃভূমি—মায়ের ভূমি।
*বিভক্তি, নির্দেশক, বচনযুক্ত বানানে ঈ-কার অপরিবর্তিত থাকে। যেমন : বিজ্ঞানীকে, বিজ্ঞানীটি, বিজ্ঞানীগণ, বিজ্ঞানীরা।
*বহুবচন জাতীয় শব্দে ‘কে’ বসে না। ‘কে’ একজনকে নির্দেশ করে। তাই বহুবচন জাতীয় শব্দের পরে ‘কে’ ব্যবহার বাক্যের গুণ নষ্ট করে। যেমন: তাদেরকে, আমাদেরকে, সব পাগোলগুলোকে, সব অতিথিবৃন্দগণকে।
*বস্তুবাচক একবচন পদে কোনো বিভক্তি (কে, রে) বসে না। শব্দটি একবচন হলে ‘টি’ আর বহুবচন হলে ‘গুলো’ বসে। যেমন : ঘড়িকে (ঘরিটি), বইকে (বইটি/বইগুলো) ইত্যাদি।
*সংস্কৃতিতে তাহাদিগকে/আমাদিগকে ব্যবহার করা হয়। দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাসে বস্তু বা প্রাণিবাচক কর্তায় ‘কে’ বসানো হচ্ছে। যেমন : বইকে পড়া=বইপড়া, গানকে শোনা, সাপকে ধরা, রথকে দেখা, ভয়কে প্রাপ্ত, কাপড়কে কাঁচা, ভাতকে রাঁধা, নথকে নাড়া।
প্রত্যয়
প্রত্যয় শব্দের পরে বসিয়ে নতুন শব্দ গঠন করা যায় আবার শব্দের বানানও সঠিক করা যায়। যেমন :
*লি, আমি, উরি-প্রত্যয়যোগে শব্দের বানানে ই/উ-কার হয়। যেমন : রুপালি, সোনালি, বোকামি, ডুবুরি ইত্যাদি।
*‘অ/আ’ থাকলে ‘আ+ইক’ হয়। যেমন : সমাজ+ইক=সামাজিক, সাহিত্য+ইক =সাহিত্যিক ইত্যাদি।
*অবশ্য+অক=আবশ্যক। ‘আবশ্য+অক+ঈয়=আবশকীয়’ ভুল ব্যবহার।
*‘ই’ থাকলে ‘ঐ+ইক’ হয়। যেমন : ইতিহাস+ইক=ঐতিহাসিক, ইচ্ছা+ইক= ঐচ্ছিক ইত্যাদি।
*য-প্রত্যয় যুক্ত হলে আ/ঐ/ঔ হয়। যেমন : কৃপণ+য=কার্পণ্য, শিথিল+য=শৈথল্য, চেতনা+য= চৈতন্য, সুজন+য=সৌজন্য ইত্যাদি।
*দুটি প্রত্যয় একটি শব্দের বসে না। যেমন : দৈন্যতা (দৈন্য/দীনতা), একত্রিত (এক+ত্র), সখ্যতা (সখ+য+তা) ইত্যাদি।
*ইষ্ঠ-প্রত্যয় যুক্ত হলে তর বা তম-প্রত্যয় যুক্ত হয় না। যেমন : শ্রেষ্ঠতম, শ্রেষ্ঠতর।
*ৎ+ত্ব=ত্ত্ব হয়। যেমন : মহৎ+ত্ব=মহত্ত্ব (মহত্ব হয় না)
*ইনি প্রত্যয় কিন্তু ইণি বসানো হচ্ছে। যেমন : গৃহিণী (গৃহ+ইনি)।
*ঈ—ইত্ব: কৃতী—কৃতিত্ব, স্থায়ী—স্থায়িত্ব।
*ঈ—ইতা : উপকার—উপকারী—উপকারিতা, উপযোগ—উপযোগী—উপযোগিতা।
*ঈ—ইনী : অধিকার—অধিকারী—অধিকারিনী।
*অবশ্য+ক=আবশ্যক+ঈয়=আবশ্যকীয়।
*ইত-প্রত্যয়জাত শব্দ নয় : কলুষিত, আনীত, উন্নীত, গৃহীত।
নির্দেশক
অর্থবোধক শব্দের পরে নির্দেশক যুক্ত করেও আমরা শব্দ বানাতে পারি। শব্দ বা পদের পরে বসে সেই শব্দ বা পদের সংখ্যা বা পরিমাণ নির্দেশনকারীকে নির্দেশক বলে। নির্দেশক ব্যবহারেরও কিছু নিয়ম আছে। যেমন: নির্দেশক শব্দের আগে বা পরে যুক্ত করে শব্দ বানাতে পারি। তবে ‘টা/টি, খানা/খানি’ শব্দের সাথে যুক্ত করে শব্দকে নির্দেষ্ট করলে আবার তার আগে ‘এই’ বা ‘ঐ’ ব্যবহার করা যাবে না। শব্দের পরে গুলো যুক্ত হলে এরপরে আবার কে যুক্ত করা যাবে না।
‘টি/টা/খানা/খানি’ ব্যবহার করে শব্দকে নির্দিষ্ট করলে তার আগে ‘এই, ওই, সেই’ ব্যবহার করা হয় না। যেমন : এই বইটি, এই গ্রন্থটি, এই বইখানি, এই রচনাটি, ওই বইটি, সেই ছেলেটি ইত্যাদি। সমস্ত ধারণাটি—সমস্ত ধারণা বা ধারণাগুলো।
জাতি, বস্তু, সমষ্টি বা গুণবাচক বিশেষ্য পদের সাথে যুক্ত—মানুষটা/টি, বেড়ালটি, গরুগুলো, বাড়িগুলো। সর্বনামপদের সাথে যুক্ত—এইটি/এটি, সেইটি/সেটি, ঐটি, ঐগুলো, ঐসবগুলো, কোনটি, কোনগুলো, যেটি, যেগুলো, অন্যটি, অন্যগুলো।
বিশেষণ পদের সাথে যুক্ত—অনেকটা, অনেকগুলো, কিছুটা, এতটা, এতগুলো, ভালোটা/টি, মন্দটা/টি, সত্যটি, সবুজটি। ঠান্ডটি, রোগাটি, দশটি, অর্ধেকটি, বেশিটি, অল্পটি, অনেকগুলো ইত্যাদি। সংস্কৃত সমষ্টিবাচক একশব্দ হতে পারে আবার আলাদা বসতে পারে। টি/টা, খানা/খানি, টুকু, টুকুন, গোটা, ফালি, খণ্ড, টুকরা, ইত্যাদি শব্দের পরে একসাথে বসে এবং এদের পরে ‘কে’ প্রয়োজনে বসে।


বচন
সংখ্যার ধারণা অর্থাৎ গণনায় এক, অধিক, আস্ত, খণ্ড বা বেশি বুঝাতে বচন লাগে। বিশ্বের অন্যান্য ভাষায় একবচন, দ্বিবচন, বহুবচন আছে কিন্তু বাংলা ও ইংরেজিতে একবচন ও বহুবচন ব্যবহার করা হয়। ইংরেজি বা সংস্কৃতিতে ‘সকল শিক্ষকগণ’ লেখা হলেও বাংলাতে ‘সকল শিক্ষক’ লেখা হয়। একটি বাক্যে দুবার বা তিনবার বহুত্বচিহ্ন ব্যবহার করে বাক্যের গুণ নষ্ট করা হয়। যেমন : গ্রামগুলো সব, লক্ষ লক্ষ শিশুগুলো সব, সব রাজাকারদের, যাবতীয় প্রাণিবৃন্দ, লেখকবৃন্দদেরকে, সকল অতিথিবৃন্দগণদের ইত্যাদি।
‘কিছু/অল্প’ ব্যবহার হলে পরে বহুবচন হয় না। যেমন : কিছু লোকদের, কিছুসংখ্যক, অল্পসংখ্যক, কিছু মানুষদের, অধিক/বেশি পরিমাণ। ‘গণ, বৃন্দ, বর্গ, মণ্ডলি, সব, সকল, সমূহ, অজস্র, নানা, নানান, ঢের, অনেক, বিস্তর, বহু, কুল, গোছা, রাশি, রাজি, মালা, গুচ্ছ, পুঞ্জ, আবলি, জোড়া, ডজন, হালি’ ইত্যাদি বহুবচন শব্দের পরে ‘কে’ বসে না। যেমন : গণকে, সমূহকে।
চিহ্ন/লিঙ্গ
*সংস্কৃতিতে বিশেষণ ও বিশেষ্য দুটিকেই চিহ্নের আওতায় আনা হয়। যেমন : নর—সুন্দর বালক আর নারী—সুন্দরী বালিকা কিন্তু বাংলায় বিশেষণকে নারিবাচক করার দরকার হয় না। যেমন : সুন্দর বালিকা।
*সংস্কৃতিতে দুটি বিশেষ্যকেই চিহ্নের আওতায় আনা হয়। যেমন : ময়েটি পাগলি, আসমা অস্থিরা কিন্তু বাংলায় দুটি বিশেষ্যের একটিকে নারিচিহ্নের আওতায় আনা হয়। যেমন : মেয়েটি পাগল, আসমা অস্থির ইত্যাদি।
*সংস্কৃতিতে ঈ বা ইনি বা নী-প্রত্যয়ই একসাথে বসে কিন্তু বাংলায় বসে না। যেমন: অভাগা—অভাগী—অভাগিনী, ননদিনী, কাঙালিনী ইত্যদি। বাংলায় অভাগী, ননদী, মায়াবী, কাঙালী, গোয়ালী, বাঘিনী হয়। তবে ক্লীববাচক শব্দে নী-প্রত্যয় যুক্ত করে নারিবাচক শব্দ তৈরি করতে হয়। যেমন : মেধাবিনী, দুখিনী, যোগিনী, মায়াবিনী ইত্যাদি।
*সংস্কৃতিতে ক্ষুদ্রার্থবাচক কিছু ক্লীববাচক শব্দকে নর বা নারিবাচক করা যায়। যেমন: নাটক—নাটিকা, উপন্যাস— উপন্যাসিকা, পুস্তক —পুস্তিকা, গীতি—গীতিকা ইত্যাদি।
রুপান্তর শব্দ
*বিশেষ্য থেকে বিশেষণ—অভিধান—আভিধানিক, দীন—দৈন্য ইত্যাদি।
*বিশেষ্য থেকে ক্রিয়া—কাজ—কাজ করা, ঘুম—ঘুম পড়ানো/ঘুমানো, পানি>পানি দেয়া ইত্যাদি।
ঙ/ং-এর বানান
*অহম/ভয়ং/শুভম/সম/ম থাকলে ‘ং’ বসে। যেমন: অহংকার, সংগীত, অলংকার, অহংকার, সংকল্প, সংকল্প, সং, রং, ঢং।
*অ ধ্বনির পর ক খ গ ঘ ক্ষ থাকলে ‘ঙ্ক’ বসে। যেমন: অঙ্ক, আকাক্সক্ষা, কঙ্কাল, জলাতঙ্ক, পঙ্কজ, বঙ্গ, শৃঙ্খল।
*বর্তমানে ‘ঙ’ দিয়ে লেখা হয় : আঙুর, আঙুল, আঙিনা, কাঙাল, ঘুঙুর, চোঙা, ঠোঙা, ডিঙি, বাঙালি, ভাঙা, রাঙা, রঙিন, রাঙামাটি, লাঙল , শিঙাড়া, হাঙর ইত্যাদি।
*বর্তমানে ‘ঙ’ দিয়ে লেখা হয় : অঙ্গ, ভঙ্গ, রঙ্গ, সঙ্গ ইত্যাদি।
বিসর্গের বানান
*বিসর্গ বর্জিত ও আশ্রিত শব্দ : মনঃকষ্ট—মনোকষ্ট, পুনঃপ্রকাশ—পুনর্প্রকাশ।
চন্দ্রবিন্দু আশ্রিত শব্দের বানান
সংস্কৃত নাসিক্য উচ্চারিত শব্দের ক্ষেত্রে বাংলা চন্দ্রবিন্দু বসে। এটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কৃতিত্ব। যেমন :
*‘ন/ণ/চ/ম/ং’ ইত্যাদির পরিবর্তে চন্দ্রবিন্দু বসে। যেমন: বংশ>বাঁশ, কণ্টক>কাঁটা, চন্দ্র>চাঁদ, উচ্চ>উঁচু, কম্পন>কাঁপা।
*দেশি ও বিদেশি শব্দেও চন্দ্রবিন্দু বসে। যেমন : ডাঁস, ঢেঁকি, যাঁতা, তাঁবু, পিঁয়াজ, কাঁচি, রেনেসাঁ, পেঁপে, রেস্তরাঁ।
ণ/ন-এর বানান
*ঋ, র, র-ফলা, রেফ থাকলে ণ বসে। যেমন: ঋণ, চরণ, স্বর্ণ।
*প্র, পরি, নির, পর থাকলে ণ বসে। যেমন : প্রণাম, পরিত্রাণ, নির্ণয়, পরিণতি, অপরাহ্ণ।
*ক-বর্গ (ক, খ, গ, ঘ, ঙ) থাকলে ণ বসে। যেমন : রুগ্ণ, প্রাঙ্গন।
*প-বর্গ (প, ফ, ব, ভ, ম) থাকলে ণ বসে। যেমন : কৃপণ, দ্রবণ, শ্রবণ।
* য, য়, হ থাকলে ণ বসে। যেমন : পরায়ণ, রামায়ণ, গ্রহণ,
*ট—ঠ—ড—ঢ—ণ। তাই ট-বর্গে ণ বসে। যেমন : কণ্টক, কণ্ঠ, আণ্ডা, বিষণ্ন।
*ত—থ-দ—ধ-ন। তাই ত-বর্গে ন বসে। যেমন : শান্ত, মন্থন, দন্ত, বন্ধ, অন্ন।
*বিদেশি শব্দ, তদ্ভব শব্দ, ক্রিয়াশব্দ, ত-বর্গীয় শব্দ ও সাধিত শব্দে ‘ন’ বসে। যেমন : গ্রিন, হর্ন, কান, অন্ত, করেন, নির্গমন।
*নি বা না নাবাচক উপসর্গ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এরা একসাথে বসে। যেমন: নিবাস, নিখোঁজ, নারাজ, নাখোশ, নারাজ।
ষ/স/শ-এর বানান
*উপসর্গ+ই/উ-কার থাকলে ‘ষ’ হয়। যেমন : আবিষ্কর, পরিষ্কার, অনুষঙ্গ, নিষ্কৃতি, নিষ্পন্ন। (ব্যতিক্রম : অনুসরণ, অভিসার, পরিসমাপ্তি)।
* এ নিয়ম বাদে ‘স’ বসে অর্থাৎ অ-কার-এর পরের বর্ণে ‘স’ বসে। যেমন : পুরস্কার, তিরস্কার, নমস্কার, ভাস্কর।
*ঋ/ঋ-কার, রেফ, ট/ঠ থাকলে ‘ষ’ হয়। যেমন : ঋষি, কৃষক, সৃষ্টি, শ্রেষ্ঠ, পৃষ্ঠা।
*‘নিঃ, ‘দুঃ’ অধি/অনু/অভি/পরি/প্রতি/বি/সু-যুক্ত উপসর্গে ‘ষ’ বসে। যেমন : নিষ্ঠুর, অনুষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান, সুষ্ঠু।
*‘নিষ’ ও ‘দুষ’-যুক্ত শব্দে ‘ষ’ বসে। যেমন: নিষেধ, নিষ্পন্ন, দুষ্প্রাপ্য, দুষ্কর, দুষ্কৃতি।
*বিশেষ্য হলে ‘শ’ আর বিশেষণ হলে ‘ষ’ হয়। যেমন : আদেশ-আদিষ্ট, আবেশ-আবিষ্ট, নির্দেশ—নির্দিষ্ট, বিনাশ—বিনষ্ট।
*চ-বর্গীয় শব্দে ‘শ’ বসে। যেমন: আশ্চর্য, নিশ্চয়, পশ্চিম।
*সন্ধি বা বিসর্গ সন্ধিতে ‘স’ বসে। যেমন: তিরস্কার, পুরস্কার, ভাস্কর, বৃহস্পতি।
*সাৎ-প্রত্যয়যুক্ত শব্দে ‘স’ বসে। যেমন: ধূলিসাৎ, আকসাৎ।
*ট-বর্গীয় বিদেশি শব্দে ‘স’ বসে। যেমন: আগস্ট, স্টোর, পোস্টার, পেস্ট, স্টার্ন, স্ট্রিট, স্টেডিয়াম, স্টিকার।
*বিদেশি শব্দে সবসময় ‘শ’ (sh/sion/ssion/tion)’ বা ‘স’ (s)ব্যবহৃত হয়। যেমন: মাস্টার, রেজিস্ট্রার, ভিশন, স্টেশন, তামাশা, খুশি।
নাম শব্দের বানান
একটি সুন্দর অর্থবোধক নাম ব্যক্তি, স্থান বা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রত্যেকেই পছন্দ করেন। আবার ব্যক্তি নামকরণ নিয়েও লেখকগণ কম মজা করেননি। ছেলেটি অন্ধ কিন্তু তার নাম পদ্মলোচন। মেয়েটি বোবা কিন্তু তার নাম সুভাষিনি। মেয়েটি কুৎসিত কিন্তু তার নাম বিউটি। নামটি যদি অর্থবোধক হয় তাহলে ভুলের কারণে নামটির অর্থ নষ্ট হবে আর সঠিক অর্থ না থাকলে অবশ্যই সেটি ভুল হবে। ‘কিরন’ লিখলে আলো ছড়াবে না—আলো ছড়ানোর জন্য লিখতে হবে ‘কিরণ’। ‘প্রসূন’ মানে ফুল যদি লেখি ‘প্রসুন’ তাহলে নিশ্চই ঠিক হবে না। যদি লেখি ‘মনি’ তাহলে কি হবে ‘মূল্যবান পাথর’?
*সন্ধিজাত নামশব্দ একশব্দ হয়—শরৎচন্দ্র/শরচ্চন্দ্র (শরৎ+চন্দ্র), রবি+ইন্দ্র =রবীন্দ্র।
*সমাসজাত নামশব্দ একশব্দ হয়—মদনমোহন, ঈশ্বরচন্দ্র, রবিঠাকুর, জসীমউদদীন, সুবলকুমার, চন্দনকৃষ্ণ, কালিদাস, রজনিকান্ত।
*বিদেশি নামশব্দে ঈ-কার/ণ/ৎ/ছ ইত্যদি ব্যবহারের নিয়ম নাই তবু ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন: উদ্দীন, কবীর, জসীম, ছালাম, ঝর্ণা, রহীম, শহীদুল্লাহ, হায়াৎ, হাবীব।
*অনেকেই একই শব্দ বহুরকম বানানে লিখে থাকনে। যেমন: মোহাম্মদ/মোহাম্মাদ/ মুহম্মদ/ মুহম্মাদ /মুহাম্মদ, আহম্মদ/আহম্মাদ/আহমোদ/আহমেদ/আহমদ/আহমাদ, রহমান/রাহমান/রেহমান, মঈনউদ্দিন /মঈনুদ্দীন/মইনুদ্দি/মাইনুদ্দিন, হোমায়ন/হুমায়ুন/হুমায়ূন।
*স্থান বা প্রতিষ্ঠানের বানানের ক্ষেত্রে যে বানান আছে তাই লিখতে হবে তবে নতুন কোনো নাম দিলে খেয়াল রেখে দিতে হবে। যেমন: যাত্রাবাড়ী, রাজবাড়ী, গাজীপুর ইত্যাদি।
*বাংলা একাডেমি ‘ই-কার’ করলেও ভিকারুন নিসা নূন ‘উ-কার’ করবে না কারণ বাংলা ‘নুন’ অর্থ ‘লবণ’।

জাতি ও ভাষা শব্দ
জাতি ও ভাষা শব্দে ই-কার বসে। যেমন: দেশি, বিদেশি, বাংলাদেশি, স্বদেশি, বাঙালি, জাপানি, ইরাকি, আরবি, ফারসি, ইংলিশ, হিন্দি, ইতালি, চিলি। কিন্তু চীন ঈ-কার দিয়ে লেখা হয়।
কিছু জটিল বানান
এমন কিছু সংস্কৃত শব্দ আছে যাদের বানান মনে রাখতে কষ্ট হয়। বানান করে লিখতে গেলে ভুল হয়ে যায়। তাই এদের মুখস্থ রাকা জরুরি। যেমন: অকস্মাৎ, অগ্ন্যৎপাত, অধ্যবসায়, অন্তর্জ্বালা, অমর্ত্য, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, অলঙ্ঘ্য, আকাঙ্ক্ষা, আর্দ্র, উজ্জ্বল, উত্ত্যক্ত, উপর্যুক্ত, উপলব্ধি, ঔদ্ধত্য, কর্তৃত্ব, কাঙ্ক্ষিত, ক্ষুব্ধ, গার্হস্থ, গ্রীষ্ম, ঘূর্ণ্যমান, জলোচ্ছ্বাস, জীবাশ্ম, জ্বর, জ্বলা, জ্যেষ্ঠ, জ্যোৎস্না, জ্যেতাতি, জ্যোতিষ্ক, তত্ত্ব, তত্ত্ববধান, তীক্ষ্ণ, ত্যক্ত, দারিদ্র্য, দৌরাত্ম, দ্বন্দ্ব, দ্বেশ, দ্বৈত, দ্ব্যর্থ, ধ্বংস, ধ্বন্যাত্মক, নিক্বণ, নির্দ্বিধা, ন্যস্ত, ন্যুব্জ, ন্যূন, পক্ক, পংক্তি, পরিস্রাবণ, পার্শ্ব, প্রতিদ্বন্দ্বী, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রত্যূষ, প্রার্তভ্রমণ, পুর্ননিমাণ, প্রোজ্জ্বল, বন্ধ্যা, সন্ধ্যা, বিভীষিকা, বৈচিত্র্য, বৈশিষ্ট্য, ব্যক্ত, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র, ব্যগ্র, ব্যয়, ব্যথা, ব্যঞ্জনা, ব্যতিক্রম, ব্যত্যয়, ব্যবহার, ব্যাখ্যা, ব্যুৎপত্তি, ব্রাহ্মণ, ভ্রাতৃত্ব, মুমূর্ষু, শাশ্বত, শিরশ্ছেদ, শ্বশুর, শ্মশান, শ্মশ্রু, শ্লেষ্মা, ষাণ্মাসিক, সত্তা, সত্ত্ব, স্বত্ব, সত্ত্বেও, সন্ন্যাস, সূক্ষ্ম, সৌহার্দ্য, স্বতঃস্ফূর্ত, স্বাচ্ছন্দ্য, স্বাতন্ত্র্য, স্বায়ত্তশাসন, স্বাস্থ্য, স্মরণ, হ্রস্ব, হ্রাস।
মন্দবানান

বর্তমানে এমন কিছু শব্দ কথায় কথায় তৈরি হয়ে যায় যার কোনো নির্দিষ্ট অর্থ নাই। তবে নেগেটিভ অর্থাৎ মন্দ অর্থ ধলে নেয়া হয়। যেমন: গুলমারা, বেল নাই, ইভটিজিং ইত্যাদি।

শব্দের উচ্চারণগত বানান

সংস্কৃত, দেশি, বিদেশি ইত্যাদি শব্দের বানান উচ্চারণ অনুসারে লেখা হয় না। যেমন : স্বাগতম—সোয়াগতম, চকোলেট-চকলেট, এবাদত—ইবাদাত, রসুল—রাসূল, কতো, হতো, করছিলো, কোরবো, আছো, বললো, কোরলো ইত্যাদি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩০ সালে ‘সহজপাঠ প্রথম ভাগ’ গ্রন্থে উচ্চারণ অনুসারে কিছু বানান লিখেছিলেন। যেমন : ছোটো, বড়ো, গোরু, আনো, দেখো, শোনো ইত্যাদি।
কিছু দ্বন্দ্বপ্রধান শব্দের বানান উচ্চারণ অনুসারে লেখা হয়। যেমন :
বিশেষ্য—বিশেষণ : মত—মতো, কাল—কালো, ভালো—ভালো, মাত—মাতো, জাত—জাতো, বার—বারো।
বিশেষণ—ক্রিয়া : আসল—আসলো।
প্রযোজক ক্রিয়া : ক্রিয়ার শেষে যদি ত, ব, ল, বর্ণ থাকে তাহলে এদের সাথে ও-কার বসে না। যেমন: হত, যেত, বলত, বলব, উঠব, বলেছিল, এসেছিল, বলল, চলল, খেলল, উঠল।
ক্রিয়ার শেষে যদি ন থাকে এবং ওটা যদি প্রযোজক ক্রিয়া হয় তাহলে ন-এর সাথে ও-কার বসে। যেমন: উঠান—উঠানো, জাগান—জাগানো, শুয়ান—শুয়ানো।
সংখ্যাবাচক শব্দ : এগারো, বারো, তেরো, চৌদ্দো, পনেরো, ষলো, সতেরো, আঠারো।
প্রশ্নবাচক শব্দ : কেন—কোনো, কোন—কোনো, কি (সম্মতিজ্ঞাপন প্রশ্নে)— কী (বিষয়জ্ঞাপন প্রশ্নে/আবেগ/সন্দেহ/ বিস্ময়/লজ্জা/ঘৃণা)।
অনুজ্ঞাবাচক ক্রিয়াশব্দ : ‘তুই’ সর্বনামের ক্রিয়ায় ও-কার বসে না। আবার ‘তুমি’ সর্বনাম থাকলে উচ্চারণ অনুসারে ও-কার ব্যবহার করা যায়। যেমন : কর—করো—কোরে—করানো, চল—চলো— চালানো, শোন—শোনো—শোনানো, হল—হলো, বল—বলো—বলানো।
‘ত’ বর্ণের উচ্চারণ
১. শব্দের শেষে ‘ত’ থাকলে ও-কার উচ্চারিত হয়। যেমন: কত, শত, নত, মত, খত—ক্ষত, লিখিত, পরীক্ষিত, চলিত, তদ্ধিত, নিয়মিত, পঠিত, জ্ঞাত, রক্ষিত।
২. দ্বন্দ্ব তৈরি করে এমন শব্দে ও-কার দেয়া উচিত। যেন: মত—মতো।
৩. যুক্তবর্ণ হলে দ্বিত্ব হবে। যেমন: আয়ত্ত, সত্ত্ব ইত্যাদি।
৪. খণ্ড ‘ত’ হসন্ত উচ্চারিত হবে। যেমন: ইষৎ, ওৎ, উৎপাত, উৎস ইত্যাদি।
বর্ণ রূপান্তরিত শব্দ
কিছু শব্দ—ইস্কুল, রুপো, শেয়াল, ডাইল, চাইল, ফাগুন, বড়দি, কপাট, গপ্প, সক্কাল, মশাই, দেয়া।
ম-ফলা উচ্চারিত ও অনুচ্চারিত বানান
১. উচ্চারিত: গুল্ম, জন্ম, সম্মান
২. অনুচ্চারিত: স্মরণ, স্মৃতি, সূক্ষ্ম
৩. দ্বিত্ব উচ্চারিত: আত্মা, পদ্ম, গ্রীষ্ম
ষ-ফলা (উচ্চারিত ও অনুচ্চারিত বানান
১. এ্যা উচ্চারিত: ব্যয়, ত্যাগ, ব্যাগ
২. অনুচ্চারিত : জ্যোতি, জ্যেষ্ঠ
৩. দ্বিত্ব উচ্চারিত: পদ্য, জন্য, শস্য
৪. য উচ্চারিত: সাহায্য, সহ্য, সুয্যি
ব-ফলা উচ্চারিত ও অনুচ্চারিত বানান
১. উচ্চারিত : আব্বা, জব্বার
২. অনুচ্চারিত : অন্বয়, ধ্বনি, জ্বালা, দ্বন্দ্ব, সান্ত্বনা,
৩. দ্বিত্ব উচ্চারিত: অশ্ব, বিশ্ব, নিজস্ব
৪. ওভ উচ্চারিত : আহ্বান (আওভান)
৫. উভ উচ্চারিত: জিহ্বা (জিউভা)
হ-যুক্তবর্ণ উচ্চারিত ও অনুচ্চারিত বানান
হ-এর সাথে কোনো বর্ণ যুক্ত হলে হ-এর উচ্চারণ লুপ্ত হয়ে যায়। যেমন: হৃদয় (hrদয়), হ্রদ (hrদ), চিহ্ণ (চিনh), অপরাহ্ণ (অপরানh), ব্রহ্ম (ব্রোমh), ঊহ্য (উজঝো), অহ্লাদ (আhলাদ), আহ্বান (আওভান), জিহ্বা (জিউভা>জিভ) ইত্যাদি।
অশুদ্ধি ও শুদ্ধি বানান
অশুদ্ধি - শুদ্ধি
ইংরেজী - ইংরেজি
গুণবতি - গুণবতী
প্রাণীবিদ্যা - প্রাণিবিদ্যা
কৃতীত্ব - কৃতিত্ব
আকাঙ্খা - আকাঙ্ক্ষা
ধুলি - ধূলি
সন্নাসী - সন্ন্যাসী
দৌরাত্ম - দৌরাত্ম্য
দ্বন্দ - দ্বন্দ্ব
পুরষ্কার - পুরস্কার
মণিষি - মনীষী
ঐক্যতান - ঐকতান
মুহুমুহু - মুহুর্মহু
কর্ণার - কর্নার
হ’ল - হলো
রূপালী - রুপালি
সম্বর্ধনা - সংবর্ধনা
ষ্টেশন - স্টেশন
অশুদ্ধি - শুদ্ধি
চিন - চীন
বুদ্ধিমতি - বুদ্দিমতী
মন্ত্রীসভা - মন্ত্রিসভা
সঙ্গীনী - সঙ্গিনী
অংক - অঙ্ক
ব্রাক্ষ্মণ - ব্রাহ্মণ
স্বাচ্ছন্দ - স্বাচ্ছন্দ্য
পংক্তি - পঙক্তি
জলোচ্ছাস - জলোচ্ছ্বাস
বুৎপত্তি - ব্যুৎপত্তি
উপযোগীতা - উপযোগিতা
শুসুষা - শুশ্রুষা
পাষান - পাষাণ
কার্যতঃ - কার্যত
দু’জন - দুজন
সেনালী - সোনালি
মুমুর্ষু - মুমূর্ষু
ফটোষ্ট্যাট - ফটোস্ট্যাট
অশুদ্ধি - শুদ্ধি
জোতি - জ্যোতি
ঘটনাবলী - ঘটনাবলি
দ্রারিদ্রতা - দ্রারিদ্র
সখ্যতা - সখ্য
বিভিষিকা - বিভীষিকা
সৌহাদ্য -
হৃদপিন্ড - হৃদপিণ্ড
নিক্কণ - নিক্বণ
আবিস্কার - আবিষ্কার
রুক্সিনি - রুক্সিণী
পিপিলিকা - পিপীলিকা
সমিচিন - সমীচীন
পর্ব্বত - পর্বত
প্রায়শঃ - প্রায়শ
চেক্ - চেক,
বর্ণালী - বর্ণালি
সৌহাদ্য - সৌহার্দ্য
ফটোষ্ট্যাট - ফটোস্ট্যাট

☞ এই পোষ্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন☞জিজ্ঞাসা☞সমস্যা☞তথ্য জানার থাকে তাহলে আপনি☞কমেন্ট করলে আপনাকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব☞☞☞ "বানান ও বাক্য শুদ্ধি"

Post a Comment

যোগাযোগ ফর্ম

Name

Email *

Message *

 BIPLOB BLOGGER

প্রতিদিন সকল ধরনের চাকরির খবর আপডেট পেতে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করবে এবং আপনি যদি এন্ড্রয়েড মোবাইলে আপনার চাকরির বিজ্ঞপ্তি গুলো পেতে চান তাহলে আমাদের একটি অ্যাপস রয়েছে সেটি নিচের দেওয়া লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন

বাংলাদেশ রেলওয়েতে একটি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে পদের 
নামঃ খালাসী 
পদ সংখ্যা:-১০৮৬ জন
আবেদনের শেষ তারিখ:-২৬ই জানুয়ারি ২০২২।  ও বিস্তারিত জানুন নিচের দেওয়া ভিডিওটিতে